স্বাস্থ্য বার্তা

ঋতুকালীন কিছু রোগ ও তার প্রতিকার

ঋতু বৈচিত্র্যের এই দেশে এ সময় আবহাওয়ায় তাপমাত্রার পরিবর্তন হচ্ছে। কখনও ঠাণ্ডা, কখনও গরম, কখনও বৃষ্টিতে ভেজা, কখনও পথের ধারের খাবার খেয়ে আমরা অসুস্থ হচ্ছি। যদি জানতে পারি এ সময়ের রোগ বালাইগুলো কী, কীভাবে হচ্ছে এবং কীভাবে আমরা প্রতিরোধ করতে পারি তাহলে সহজেই রোগ-শোক থেকে দূরে থাকতে পারব।

ভাইরাস ফিভার
শীতের শেষে ও গরমের শুরুতে বাতাসে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এই ভাইরাসগুলো বাতাসে, পানিতে খুব সক্রিয় অবস্থায় থাকে এবং এই তাপমাত্রায় জীবাণু দ্রুত বংশবিস্তার করতে পারে। ফলে আমরা সহজেই হাঁচি, কাশি, সর্দি, নাক বন্ধ থাকা, গলাব্যথা, শরীর ম্যাজম্যাজ করা ও হালকা জ্বরে আক্রান্ত হই। 
এ সমস্যায় তারাই বেশি আক্রান্ত হন যাদের বয়স খুব কম বা বেশি অর্থাৎ শিশু ও বৃদ্ধরা। যারা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, অপুষ্টি ও ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং যারা জনবহুল স্থানে থাকেন বা কাজ করেন তারা এই ফ্লু লাইক সিনড্রোমে বেশি আক্রান্ত হন।

করণীয়: রোগীদের পর্যাপ্ত তরল যেমন নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি, ওরস্যালাইন, ডাবের পানি, ফলের রস ও গরম স্যুপ খেতে বলি এবং প্রয়োজনে বাসায় বিশ্রাম নেয়ারও পরামর্শ দিয়ে থাকি। 
ত্বকে ইনফেকশন: এরই মধ্যে এক পশলা বৃষ্টিও হয়ে গেল। বৃষ্টিতে ভিজে ত্বক না মুছে ফেললে ফাঙ্গাল বা ছত্রাক ইনফেকশন হতে পারে। ত্বক সাদা হওয়া ও চারপাশে একটু উঁচু হয়ে যাওয়া এবং সঙ্গে চুলকানি থাকা ফাঙ্গাল ইনফেকশনের লক্ষণ। এমন অবস্থা হলেই ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। 

গলা ব্যথা: ঠাণ্ডা পানি পান করা, আইসক্রিম খাওয়া বা তাপমাত্রার পরিবর্তনে গলাব্যথা হতে পরে। টনসিলে প্রদাহ বা ইনফেকশন কিংবা গলার প্রদাহ বা ফ্যারেনজাইটিস থেকে এ সমস্যা হয়। কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে গরগরা ও গরম খাবার খাওয়া এক্ষেত্রে উপকারী। কোনো অবস্থাতেই ঠাণ্ডা খাওয়া যাবে না।  
ডাক্তার দেখিয়ে প্রয়োজনে এন্টিবায়োটিক খেতে হবে। ডাক্তার যদি মনে করেন অ্যালার্জির কারণে এ সমস্যা হয়েছে তবে এন্টি অ্যালাজিক বা এন্টিহিস্টামিন দিবেন। সাধারণত ডেসলোরাটিডিন, ফেক্সোফেনাডিন, কিটোটিফেন নামক ওষুধ আমরা দিয়ে থাকি।

পেটের ব্যাধি: পেটে হঠাৎ ব্যথা, কামড়ানো ভাব, বমি বা বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া সিজন পরিবর্তনের এ সময়েও হয়ে থাকে। অভিজ্ঞতায় দেখেছি রাস্তার বা খোলা আবহাওয়ার শরবত বা ফলের জুস বা সালাদ খেয়ে রোগীরা পেটের ব্যাধিতে ভুগে আমাদের কাছে আসেন। কখনও ঘরের বা বাইরের বাসি-পচা, দুর্গন্ধযুক্ত, খাবার খেয়েও এ সমস্যা হতে পারে।
ডায়রিয়া হলে পর্যাপ্ত ওরস্যালাইন খাওয়াই প্রাথমিক, উত্তম ও কার্যকরী চিকিৎসা। বাথরুমের সঙ্গে যদি রক্ত যায়, জ্বর থাকে তবে ডাক্তারের পরামর্শে এন্টিবায়োটিক খাওয়া যায়।  
বমিরোধক ট্যাবলেট বা সিরাপ এবং গ্যাস্ট্রাইটিসের জন্যও ওষুধ খাওয়া যায়। এক্ষেত্রে পার্সোনাল হাইজিন অর্থাৎ ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। খাওয়ার আগে ও বাথরুমের পরে সাবান বা ছাই দিয়ে হাত ধোয়া উপকারী।  

ডেঙ্গু জ্বর: ৫-৭ দিনের তীব্র জ্বর, সঙ্গে তীব্র শরীর ও মাথাব্যথা থাকলে আমরা ডেঙ্গু জ্বরের কথা ভাবতে পারি। রক্তের কিছু পরীক্ষা করে আমরা এ রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হই। পর্যাপ্ত পানি পান, বিশ্রাম ও জ্বর-ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল খাওয়াই এ রোগের চিকিৎসা।
ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে এখন আতংক অনেক কমে গেছে। তবে যদি রক্তের প্লাটিলেট কাউন্ট অনেক কমে যায়, রক্তচাপ ও পালস রেট কমে যায়, রোগীর শ্বাসকষ্ট বা পেট ফুলে যায় এবং শরীরের কোনো অংশ থেকে রক্তক্ষরণ হয় তবে এ জ্বরকে সিরিয়াসলি নিয়ে ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে।
 
চিকেন পক্স: ভাইরাস থেকে ত্বকের সমস্যা চিকেন পক্স এ মৌসুমেই বেশি হয়। বিশ্বজুড়ে এ পক্স কোথাও হয় না বললেই চলে, বাংলাদেশেও এখন আগের মতো অতটা চিকেন পক্স দেখা যায় না। আমাদের সচেতনতা ও রোগের শুরুতেই চিকিৎসা পরামর্শ ও সতর্কতা এ রোগের জটিলতা কমিয়ে এনেছে। 
আগেই বলেছি, ভাইরাস দিয়ে এ রোগ হলেও আমরা রোগের জটিলতা প্রতিরোধ করার জন্য এন্টিভাইরাল ও এন্টিবায়োটিক দিয়ে থাকি। চুলকানি কমানোর জন্য এন্টি অ্যালার্জিকও দেয়া হয়। ত্বকে দাগ বা গর্ত যেন না পড়ে সেজন্য লোসিও ক্যালামিন ব্যবহার করতে বলি। রোগীর বিশ্রাম নেয়া ও লোশন দেয়া তখনই উপকারী যখন ত্বকের ক্রাস্ট শুকাতে থাকে। 
অর্থাৎ রোগের শেষের দিকে। এ সময়টাই চিকেন পক্স ছড়ানোর উত্তম সময়। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের এ সময় স্কুলে না গিয়ে বাসায় বিশ্রাম নেয়া ভালো। এ রোগীদের কিন্তু সব খাবারই দেয়া যাবে। মাছ-মাংস, দুধ, ডিম দেয়া যাবে না- এ ধারণা ঠিক নয়, বরং পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ এ খাবার গ্রহণ রোগীকে সুস্থ রাখতে ও রোগ আরোগ্য লাভে সহায়ক। নখ দিয়ে চুলকানো যাবে না। 

ডাস্ট অ্যালার্জি: ঢাকা ও বিভিন্ন শহরে রাস্তার ধুলা-বালি থেকে অ্যালার্জি ও হাঁপানির সমস্যা দেখা যেতে পারে। বলাই বাহুল্য নাক-মুখ দিয়ে যেন ধুলা না যায় সে ব্যাপারে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে হবে অর্থাৎ মেডিকেল গ্রেডেড মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ডাস্ট অ্যালার্জি এ থেকেই সৃষ্টি হয়। নাকে-চোখে চুলকানি, জ্বলা-জ্বলা ভাব, চোখ-নাক দিয়ে পানি পড়াও অ্যালার্জির লক্ষণ। ট্রিগারিং এ ফ্যাক্টরকে পরিহার করে চলতে পারলে রোগী সাধারণত সুস্থ হয়ে যান।

মধ্য বা শেষ রাতে কারও যেন ঘাম বা ঠাণ্ডা না লাগে সে বিষয়ে যতœবান হবেন। মৌসুমি যে ফল ও সবজি পাওয়া যাচ্ছে তা কিন্তু এ সময়ের রোগ নিরাময়ে সহায়ক। তাই এ খাদ্য প্রতিদিনের মেন্যুতে রাখবেন।

ডা. ফাহিম আহমেদ রুপম
লেখক : মেডিসিন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ

জেনারেল স্বাস্থ্য
শিশু স্বাস্থ্য
For Ad
নারী স্বাস্থ্য
পুরুষ স্বাস্থ্য

যেভাবে ইবোলা ভাইরাস ছড়ায়
সাম্প্রতিক রোগ
বদভ্যাসে কিডনি বেহাল
শিশুর ওষুধ সেবনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
শিশু স্বাস্থ্য
শিশুর বমি
শিশুদের জন্মগত হৃদরোগ
পুরুষের যৌন প্রবৃত্তি বাড়ায় মসলাদার খাবার
জোড়ার আঠালো পদার্থ শুকিয়ে গেলে
ফুসফুস ক্যানসার চিকিৎসায় ‘মাইলফলক’
ত্বকে ক্রিম লাগাবেন যেভাবে
তিন লিটার পানি বয়স কমাল ১০ বছর
গর্ভবতী মা কখন ও কতবার যাবেন চিকিৎসকের কাছে?
খাদ্য ও পুষ্টি
গরমে লেবুর সরবত
রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু টিপস
রক্তের চর্বি কমানোর জন্য খাদ্যের নিয়ম
কলেরা প্রতিরোধে কম দামি সফল টিকা
হঠাৎ বৃষ্টি ও গরমে ঠান্ডা-জ্বর হলে কি করবেন
কৃমিনাশক ওষুধ সেবনের উত্তম যে সময়
রোজাদার রোগীদের ওষুধপথ্য ও সতর্কতা অবলম্বন
অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধের ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
আদা
প্রশ্নোত্তর : রক্তচাপ
আপনার প্রশ্ন বিশেষজ্ঞের উত্তর
প্রশ্নোত্তর- বিষয়: কিডনি রোগ
হাততালিও হতে পারে প্রতিদিন সুস্থ থাকার হাতিয়ার
প্রতিনিয়ত দাঁতের ক্ষতি যেভাবে করি
গরমে স্বাস্থ্য- সচেতনতা
মস্তিষ্কে কি ঘটে, যখন নারী মাতৃত্ব লাভ করেন
একরাতেই ব্রণ দূর করার কৌশল
মরণব্যাধি ক্যান্সারের যে ১০ টি সতর্কীকরণ ল¶ণ অবহেলা করবেন না
দীর্ঘ ভ্রমণে স্বাস্থ্য সতর্কতা
ভ্রমণে স্বাস্থ্য সতর্কতা
টিনএজারদের ব্রণ সমস্যা ত্বকের সৌন্দর্যহানীর জন্য দায়ী
স্ক্যাবিস বা চুলকানি প্রতিরোধে করণীয়
ত্বকের যেসব রোগে চিকিৎসা একান্ত দরকার
হৃদরোগ প্রতিরোধে আপনি যা করবেন
হৃদরোগ প্রতিরোধে আপনি যা করবেন
প্রচন্ড গলাব্যথা ও টনসিলে ইনফেকশন
নাক-কান-গলার ক্যান্সার হতে সতর্ক ও সাবধান হওয়া
হঠাৎ কানের পর্দায় আঘাত পেলে
পেপটিক আলসারের আদ্যোপান্ত
অ্যালার্জি ও হাঁপানির থেকে পরিত্রাণ
কাশি যখন সমস্যা
দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের অন্যতম কারণ যখন রেটিনা
চোখের নিচের কালো দাগ কমানোর উপায় (১১ অক্টোবর বিশ্ব দৃষ্টি দিবস)
চোখ উঠলে যা করবেন
শীতকালে হাটুর ক্ষতি এড়াতে ১০টি বিষয় জেনে নিন
ঘাড়, মাথা ও বুক ব্যথার লক্ষণ ও চিকিৎসা
সকল প্রকার ব্যথায় কী বাত?
লিভার ডিজিজের অন্যতম ভয়াবহ কারণ এলকোহল
জানুন যকৃতের জন্য ভালো ও মন্দ খাবার কী
ভাইরাল হেপাটাইটিস একটি জটিল ও নিরাময়যোগ্য রোগ (২৮ জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস)
প্রশ্নোত্তরে মানসিক রোগ সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ জেনে নিই। (১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস)
হয়তো আপনার ঘরেই আছে সিজোফ্রেনিয়া রোগী
সিজোফ্রেনিয়া একটি অন্যতম মানসিক রোগ (১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস)
হাত-পায়ে জ্বালাপোড়া অনুভব করলে করণীয়
গেঁটে বাত হলে কী করবেন?
বার্ধক্যে যত ব্যথা-বেদনা
জেনে শুনে যেভাবে দাঁতের ক্ষতি করছেন