স্বাস্থ্য বার্তা

রক্তের চর্বি কমানোর জন্য খাদ্যের নিয়ম

খাদ্য পরিকল্পনা নীতি: ক্যালরি প্রয়োজন অনুযায়ী, প্রাণীজ প্রোটিনে (মাছ ব্যতীত) সম্পৃক্ত ফ্যাট (স্যাচুরেটেড ফ্যাট) বেশি থাকে বলে পরিমাণে কম খেতে হবে, পরিবর্তে উদ্ভিজ প্রোটিন জাতীয় খাদ্য বেশি খাওয়া যাবে। ফ্যাট ও তেল জাতীয় খাদ্য খুব কমিয়ে দেয়া ঠিক নয়, এতে দেহে অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিডের ঘাটতি দেখা দেবে। অসম্পৃক্ত ফ্যাট (অ্যানস্যাচুরেটেড) ও উদ্ভিজ তেল প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণে খেতে হবে। সহজ আকারের শর্করা কমিয়ে দিয়ে জটিল শর্করা জাতীয় খাদ্য খাওয়া ভালো। অাঁশ জাতীয় খাদ্য বেশি খেতে হবে। শরীরের ওজন বেশি থাকলে কমিয়ে স্বাভাবিক রাখতে হবে। ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

  • কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ ও সম্পৃক্ত ফ্যাট খাবার খাওয়া বাদ দিতে হবে, যেমন-
ক) ডিমের কুসুম (ডিমের সাদা অংশ খাওয়া যাবে), খ) কলিজা, গ) মাছের ডিম, ঘ) গোশমরে চর্বি, ঙ) হাঁস মুরগীর চামড়া, চ) হাড়ের মজ্জা, ছ) ঘি, মাখন, ডালডা, মার্জারিন, জ) গলদা চিংড়ি, ঝ) নারকেল এবং উপরোক্ত খাদ্য দিয়ে তৈরি খাবার।
 
  • অাঁশযুক্ত খাবার বেশি করে খেতে হবে
ডাল, সব রকমের। বিশেষত ছোলার ডাল, বুট (নাশতায় ছোলার ডাল, দুপুর ও রাতে ডাল বেশি করে খেতে হবে)।
শাক, সব কমের। বিশেষত পুঁই শাক।
সবজি। বিশেষত খোসা সহ সবজি, যেমন- ঢ়েঁড়স, বরবটি, শিম, কচুর লতি ইত্যাদি। রসুন প্রতিদিন খাওয়া ভালো। মেথির গুড়া বা ইসুবগুলের ভুসি তিন বেলা খাবার খাওয়ার আগে খাওয়া ভালো (৩ চা চামচ ইসবগুলের ভুসি প্রতি বেলায়)
 
  • উপকারী ফ্যাট ও অসম্পৃক্ত ফ্যাট জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে
মাছ, সব রকমের। বিশেষত সমুদ্রের মাছ, মাছের তেল ইত্যাদি। উদ্ভিজ তেল, বিশেষত কর্ন ওয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল, সয়াবিন তেল, সরিষার তেল (ক্যালরি ঠিক রেখে খেতে হবে)
 
  • হিসাব করে খেতে হবে (ডায়বেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে গাইড বইয়ের নির্দেশ অনুযায়ী খেতে হবে)-
শর্করা প্রধান খাবার যেমন- ভাত, রম্নটি (ময়দা বা সাদা আটার চেয়ে লাল আটা ভালো), আলু, মিষ্টি আলু ইত্যাদি।
 
  • চিনি-মিষ্টি দিয়ে তৈরি খাবার বাদ দিতে হবে।
 
গোশত নয় মাছ শাক সবজি ও ফলমূল ধমনীর জন্য ভালো
 
যারা বেশি বেশি লাল গোশত খান, তাদের আর্টারি বা ধমনী অসুস্থ হয়ে পড়ে। দেহে রক্ত চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। হৃদরোগ বা করোনারি আর্টারির সমস্যা হয়। কিন্তু মাক সবজি ও ফলমূল Venous Thromboembolism ঝুঁকি কমায় বলে সম্প্রতি এক পরীক্ষা- নিরীক্ষায় দেখা গেছে। যত বেশি ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়া যায় VTE ঝুঁকি তত কম হয়। VTE পায়ে হয়ে Vein Thrombosis হয়। ধমনীর দেয়া রক্ত জমাটবদ্ধ হয়ে ফুসফুসে রক্ত চলাচল বন্ধ করে দিতে পারে, যা অত্যমত্ম মারাত্মক। এই তথ্য এসেছে Atheros- clerosis risk study থেকে। এই পরীক্ষা ও জরিপ চালানো হয়েছে ১২ বছর। রোগীরা ছিল ৪৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সের। ১৫ হাজার রোগীর উপর এই জরিপ চালানো হয়। সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন মাছ, যাতে ওমেগা- ৩ ফ্যাটি এসিড আছে, খেলে ৩০ থেকে ৪৫% VTE ঝুঁকি হ্রাস পায়। অন্য কোন খাবার VTE এত হ্রাস করতে পারে না। পাশ্চাত্য খাবার, উচ্চ মাত্রায় লাল গোশত ও প্রক্রিয়াজাত গোশত, ফাস্ট ফুড এবং দুগ্ধজাত দ্রব্য VTE ঝুঁকি বাড়ায় ৬০%। শাকসবজি, ফলমূল ফলিক অ্যাসিড রক্তসঞ্চালনে অত্যমত্ম সহায়ক এবং ধমনীকে রক্ত জমাটবদ্ধতা থেকে মুক্ত রাখে। তাই লাল গোশত, দুগ্ধজাত ও চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে মাছ, শাকসবজি ও ফলমূল খান। সুস্থ থাকুন।
 
ব্যায়ামের আগে অত্যাধিক আহার ক্ষতিকর
 
সবাই জানে কঠোর পরিশ্রমে ক্যালরি জ্বলে। কিন্তু খালি পেটে ব্যায়াম হিতকর নয়। ব্যায়ামের গতি নির্ধারিত হয় উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের ওপর। কাজেই খালি পেটে ব্যায়াম করলে ব্যায়ামের ক্ষমতা বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারে না। ফলে ব্যায়ামের উদ্দেশ্যই ব্যহত হয়। ওজন কমে না। সুতরাং ব্যায়ামের আগে হালকা কিছু খাওয়া প্রয়োজন আছে। আপনি যদি ‘ডন’ বৈঠক করেন, তবে বৈঠকের আগে পরিমিত আহার করনি যাতে আপনার রক্তের শর্করা ফিরে আসে।, যা রতে ফিরে গিয়েছিল। একটা টোস্ট বা এক টুকরা ফল গ্রহণই যথেষ্ট। ব্যায়ামের পর সণান করে এমন নাশতা করম্নন যাতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও অাঁশযুকাত খাবার রয়েছে।  দুপুরে খাবারেও যেন এসব থাকে। যেমন হালকা নাটস বা পনীয় স্যান্ডউইচ। শক্তি সঞ্চয়ের জন্য দুপুরের খাবার যেন ভালো মানের হয়। বিকেলে ব্যায়ামে যাওয়ার আগে হালকা কিছু খেয়ে যান। ক্যালরি আপনাকে শক্তি জোগাবে।
 
বয়স্ক নর নারীর হাঁটুর ব্যাথা
 
চলিস্নশোর্ধ্ব বয়সের নারী পুরম্নষের হাঁটুর ব্যাথা একটা সাধারন সমস্যা। বিশেষজ্ঞের মতে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি, ওজন বেড়ে যাওয়া এবং চলাফেরার অভাবের জন্যই এটা হয়। এছাড়া সণায়ুর সমস্যা থেকেও এটা কোন কোন সময় হয়। এজন্য প্রথম দিকে রোগী দৈনিক দুই গস্নাস অল্প গরম দুধ পান করবে এবং সম্পূরক হিসেবে ক্যালসিয়াম বড়ি খেতে পারে। নিয়মিত প্রতিদিন আধা ঘন্টা হাঁটাহাঁটি বা কোন হালকা ব্যায়াম করতে পারে। যারা মোটাসোটা বা যাদের ওজন বেশি তারা ব্যায়াম ও খাদ্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দেহের ওজন কমিয়ে ফেলতে হবে। কোনো ভারী ওজন তোলা নিষেধ। বেশি সিঁড়ি ভাঙা বিপজ্জনক হতে পারে। যদি কোনভাবেই এর চিকিৎসা না হয় তবে অত্যমত্ম সাবধানে চলাফেরা করতে হবে। প্রতিদিন সকালে গরম পানিতে গোসল করবে। তবে যেকোন হাঁটুর ব্যাথা হোমিও চিকিৎসায় ভালো হয়। কাজেই কোনো হোমিও ডাক্তারে পরামর্শ নেয়া যেতে পরে।
 
খাদ্য ও পুষ্টি
আমড়া
আমড়া বাংলাদেশের অতি পরিচিত জনপ্রিয় ফল। যদিও রান্না করে খাওয়া যায়, কিন্তু অধিকাংশ লোক কাঁচা কামড়ে চিবিয়ে খায় পুরা ভিটামিন পাওয়া ও স্বাদের জন্য।
উপকারিতা
পিত্ত বমনেঃ ভাদ্র আশ্বিন মাসে এই পিত্ত বমন রোগটা দেখা যায়। এটা হলে আগে থেকে রোদে শুকিয়ে রাখা আমড়া গাছের ছাল ৫ গ্রাম এক কাপ গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে দুই ঘন্টা পর পানিটা ছেকে নিয়ে অল্প অল্প করে দিনে তিন-চারবার খেলে ভাল হয়।
অগ্নিমান্দ্যেঃ সুপরিপক্ব আমড়া বেটে মলমের মতো করে কোন পাত্রে আমসত্ত্বের মতো করে মেলে রোদে শুকিয়ে রাখতে হয়। অগ্নিমন্দা হলে ওই শুকানো আমড়া আধা কাপ পানিতে ভিজিয়ে রেখে ওই পানি দৈনিক দুই বার দুই-তিন দিন খেলে ভালো হয়।
শরীরে জ্বালা পোড়া হলেঃ কখনো কোনো কারনে শরীর জ্বালাপোড়া করলে, গোসলের আগে আমড়ার হাল বেটে ৭-৮ চামাচ রস নিয়ে এক কাপ পনিতে মিশিয়ে ওই পানিতে কাপড় ভিজিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। তারপর এক ঘন্টা পর গোসল করার সময় শরীর ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। পরে গায়ে তিলের তেল মালিশ করে নিতে হবে। তিন চার দিন এভাবে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।
অজীর্ণ রোগেঃ যাদের মল সাদাটে, তার সঙ্গে পিত্ত, হাত-পায়ে জ্বালা, বিকেলে চোখ জ্বালা করে, মুখে স্বাদ নেই, তারা পাকা আমড়া বেটে এক কাপ পানির সঙ্গে একটু চিনি দিয়ে খেলে উপকার হবে। তিন-চার দিন খেতে হয়।
অরম্নচিতেঃ কারো কারো পেটে ক্ষিদে কিন্তু মুখে বিস্বাদ, তারা আমড়া গাছের ছালের রস এক চামচের সাথে অল্প পানি চিনি বা মধু দিয়ে শরবত বানিয়ে খেলে মুখে রম্নচি আসে।
গ্রহনী রোগেঃ কারো দিনে ২/৩ বার, রাতে নয়। আবার কারো দু’বার প্রচুর মল বেরিয়ে যায়। আবার দু’তিন দিন বাদে এক দিন ৩-৪ বার দাসত্ম হয়। এমন যাদের হয়, তারা আমড়া গাছের আঠা পানিতে ভিজিয়ে একটু চিনি দিয়ে খেলে ভালো হয়। দৈনিক দুইবার ৪-৫ দিন খেতে হবে।
শুক্র তারল্যেঃ আমড়ার আটি ভেঙে ওর শাঁস বের বরে বেটে রস বের করে সেই রস খেলে শুক্র গাঢ় হয়। রতিশক্তি বাড়ে।
 
আনারস
আনারস একটি সহজলভ্য পুষ্টিসমৃদ্ধ বর্ষাকালীন ফল। অবশ্য এখন সারা বছরই আনারস পাওয়া যায়। কাঁচা আনারস স্বাদে অমস্ন বা টক। পাকা আনারসে রয়েছে অমস্নমধুর রস, সুমিষ্ঠ গন্ধ ও স্বাদ।পুষ্টির দিক দিয়ে পাকা আনারস অতুলনীয়। আনারস নানা জাতের হয়। যেমন জলভোগ, ক্যালেন্ডার, মধুপুরূ, কুইন ইত্যাদি। পাকা আনারস দিয়ে নানা প্রকারের খাদ্য তৈরি হয়। যেমন জুস, স্কোয়াশ, সাইট্রক অ্যাসিড, ভিনেগার ইত্যাদি। ১০০ গ্রাম খাদ্য উপযোগী আনারসে যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা হলো- জলীয় অংশ- ০.৯ গ্রাম, শর্করা -৬.২ গ্রাম, ভিটামিন বি১ -০.১১ মি. গ্রাম, ভিটামিন বি২ -০.০৪ মি. গ্রাম, ক্যারোটিন-১৮৩০ মাইক্রেঠগ্রাম, লৌহ-১.২ মি. গ্রাম, খাদ্যশক্তি-৪০ ক্যালোরি। আনারেস প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি থাকায় সাধারণ ভাইরাস জ্বর, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সর্দিকাশিতে অত্যমত্ম উপকারী। আমাদের দেশে সর্দিকাশি হলে আনারস খেতে বলেন না এমন লোক খুব কমই পাওয়া যাবে। বর্ষাকালে আমাদের দেশে বেশি ইনফ্লুয়েঞ্জা দেখা যায়। শুরম্নতে আনারস খেলে দ্রম্নত ফল পাওয়া যায়। আনারসে ব্রোমোলিন নামক এক প্রকার রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা ক ফবা মিউকাসকে তরল করে এবং হজমে সহায়ক। গলা ব্যাথা, সোর থ্রোট, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং ব্রংকাইটস হলে আনারসের রস ওষুধের বিকল্প হিসাবে কাজ করে। আনারসের পাতার গোড়ার সাদা অংশের রস কৃমিনাশক। প্রত্যহ সকালে চা চামচের দুই চামচ এই রস খেলে কৃমির উৎপাত বন্ধ হয়। যাদের বদহজম বা পেট ফাপা সমস্যা লবন ও গোল মরিচের গুঁড়া দিয়ে খেলে আরোগ্য হয়। এক দিন অমত্মত এক গস্নাস আনারসের রস খেলে দেহের চর্বি কমে, মোটা মানুষ হালকা হয় এবং ওজন কমে।
 
পুরম্নষের সাস্থ্য
মেদভুঁড়ি নিয়ে আর হাসি-তামাশা করা যাচ্ছে না। আগে ভুঁড়ি সচ্ছলতা ও অভিজাত্যের পরিচয় বহন করতো। ভুঁড়িদার ব্যাক্তিদের খাওয়া- দাওয়া নিয়ে কিছু রসিকতাও করা হতো। কিন্তু আজকাল ভুঁড়ি একেবারে বেমানান বিষয়। তার পরও আমাদের অনেকের ভুঁড়ি বড় হচ্ছে ভুঁড়িদারদের কাফেলা লম্বা হচ্ছে। এটা মোটেও সুস্বাস্থ্যের লক্ষন নয়। পেটে প্রতি কেজি অতিরিক্ত চর্বি জমার মানে স্বাস্থ্যের ওপর হুমকি ক্রমেই বেড়ে যাওয়া।
মহিলাদের চেয়ে পুরম্নষদের পেটে চর্বি জমা হওয়ার প্রবনতা বেশি। কারা ওজন যা-ই হোক না কেন, পেটে অতিরিক্ত চর্বি জমা নানারকম স্বাস্থ্যসমস্যা সৃষ্টি করে; যেমন-
হৃদরোগ
উচ্চ ওক্তচাপ
মসিত্মস্কের পক্ষাঘাত
বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার
ডয়াবেটিকস (টাইপ - ২)
ইনসুলিনে প্রতিরোধ্যতা বেড়ে যাওয়া রক্তে ট্রাইগিস্নসারাইড বাড়া
কম ঘনত্বের ভালো কোলেস্টরল কমে যাওয়া
বিপাকজনিত সমস্যা
ঘুমের মধ্যে দম বন্ধ হয়ে যাওয়া
অনেকে জানতে চান- পেটে অতিরিক্ত চর্বি জমেছে কি না তা কেমন করে বোঝা যাবে? সাধারনত কটিদেশ ও কোমরের মাপ নিয়ে তার অনুপাত নির্নয় করলে এট বোঝা যায়। আরেকটি সহজ উপায় হচ্ছে শরীরের  ঘনত্ব সূচক Body mass index বা BMI নির্ণয় করা। তবে যে কারো কটিদেশের মাপ জানলেই আন্দাজ করা যায় তার অবস্থা কী? সাধারনত যাদের কটি ৪০ ইঞ্চির (১০২ সেমি) বেশি তারা বিপদের মুখে রয়েছেন। এ প্রসঙ্গে আরেকটি প্রশ্ন চলে আসে- বয়সের সাথে কি ভুঁড়ি কোনো সম্পর্কে আছে? এর উত্তর হচ্ছে বয়স বাড়ার পাশাপাশি কেউ যদি শরীূরচর্চা বা ব্যায়াম না করেন, তাহলে তার পেমি ক্ষয় হতে থাকে এবং এর ফলে শরীরের ক্যালরি খরচের পরিমান আরো কমে যায়। এ জন্য বয়সের সাথে সাথে ভুঁড়ি বাড়তে থাকে। স্থুলকায়ত্ব কিংবা অতিরিক্ত ওজনের জন্য অনেকে বংশগিত বা জিনকে দায়ী করে থাকেন। তবে বংশগতি বা জিন যত না ওজন বাড়ার জন্য দায়ী, তার চেয়ে অনেক বেশি দায়ি আমাদের জীবনাচার বা লাইফস্টাইল। যারা শারীরিক পরিশ্রম কম করে এবং বেশি খায়- তারাই মোটা হয়। তাদেরই ভুঁড়ি বাড়ে। অতিরিক্ত মদপান বিশেষত বিয়ার সেবন করলে পেটে প্রচুর চর্বি জমে যায়। অতএব যারা ভুঁড়ি কমাতে চান তাদের এ বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেমন করে ভুঁড়ি কমাব?
ভুঁড়ি কমানো আর শরীরের ওজন কমানোর মূল সূত্র একই- ক্যালরি গ্রহনের পরিমান কমাতে হবে আর শারীরিক পরিশ্রমের পরিমান বাড়াতে হবে।
  • ক্যালরি গ্রহণ কমানোর সহজ কোনো বুদ্ধি ইেন। তবে কতগুলো কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে-
  • পাতে খাবারের পরিমাণ কম নিতে হবে
  • তেল-চর্বির পরিবর্তে শাকসবজি-ফলমূল বেশি খেতে হবে
  • ফাস্টফুড যত কম খাওয়া যায়, ততই মঙ্গল
  • রেস্টুরেন্টে যত কম খাওয়া যায়, ততই মঙ্গল
  • রেস্টুরেন্টে গেলে অন্যদের সাথে খাবার ভাগ করে খেলে কম খাওয়া হবে।
  • শারীরিক পরিশ্রম বাড়াতে হবে।
  • সুস্বাস্থ্যের জন্য আমাদের প্রত্যেকের প্রতি সপ্তাহে আড়াই ঘন্টা (১৫০ মিনিট) মাঝারি মানের শারীরিক ব্যায়াম করা উচিৎ অথবা ৭৫ মিনিট ভারী ব্যায়াম করা যেতে পারে। যারা ওজন কমাতে চান তাদের এর চেয়ে বেশি ব্যায়াম করতে হবে এবং তা নিয়মিত চর্চা করতে হবে।
  • যাদের পক্ষে একটানা বেশি সময় ব্যায়ামের ফুসরত নেই, তারা কাজের ফাঁকে ফাঁকে অল্প সময়ে কিয়বা বারবার ব্যায়াম করতে পারে।
  • নৈশভোজের পর অবশ্যই কিছুক্ষন হাঁটাহাঁটি করতে হবে।
  • একবার ওজন সঠিক মাত্রয় নিয়ে আসতে পারলে তা বজায় রাখার জন্য যথাযথ খাদ্যাভাস এবং ব্যায়াম চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।
সবশেষে আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে অতিরিক্ত মেদভুঁড়ি কমানো সম্ভব। প্রয়োজন একনিষ্ঠ প্রচেষ্টা ও ধৈর্য। কয়েক কেজি অতিরিক্ত ওজন কমাতে পারলেই তা চিত্তকে প্রফুলস্ন করে এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি বহুলাংশে লাঘব করে।
 
সাম্প্রতিক রোগ
প্রতিকার ও প্রতিরোধ
ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত ভাইরাস জ্বর। এই জ্বরের প্রকোপ দক্ষিন-পূর্ব এশিয়া-ভারত, বাংলাদেশ, দক্ষিন আমেরিকা ও আফ্রিকায় বেশি দেখা যায়। কয়েক বছর পর পর ব্যপক আকারে এই রোগ ফিরে আসে। আমজনতার অশিক্ষা, সাধারন স্বাস্থ্যজ্ঞানের অভাব, সমন্বিত পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার অভাব, প্রাথমিক ও কমিউনিটি স্বাস্থ্য কাঠামোগত দুর্বলতা, দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা এসব কারন প্রকট হওয়ার বাংলাদেশে ডেঙ্গু ইদানীং ব্যাপক স্বাস্থ্য সমস্যা ও আর্থ-সামাজিক দুরবস্থা সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ সাধারনত জুন থেকে মধ্য অক্টোবর পর্যমত্ম পরিলক্ষিত হয়। প্রতি বছর এটা বিপজ্জনক আকারে হয় না, তাই দীর্ঘসময় এটা কোন আলোচনার সৃষ্টি করে না। যে বছর এই রোগে অধিকসংখ্যক মানুষ আক্রামত্ম হয় শুধু সে বছরই এটা হয়ে ওঠে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু, ব্যাপক মাশুল গণনার পরই মন আসে- A Stitch in time saves nine. ইতিহাস বলে, ১৭৭৯-১৭৮০ সালে প্রথম এশিয়ার ব্যাপকভাবে এ রোগের আবির্ভাব ঘটে, বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ব পাকিসত্মান) প্রথম চিহ্নিত হয় ১৯৬০ সালেঅ দীর্ঘবিরতির পর বার বার ফিরে আসে এই রোগ, বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। একটি আরএনএ (RNA) প্রকৃতির ভাইরাস এই ডেঙ্গু জ্বরের কারণ। ডেঙ্গু ভাইরাস প্রথম আবিষ্কার করেন ইউএস আর্মির চিকিৎসক ডা.অ্যালবার্ট স্যাবিন।এডিস ইজিপ্টি (Aedes Egypti) মশার কামড়ের মাধ্যমে ভাইরাসটি মানুষের দেহে প্রবেশ করে। পুরম্নষ মশা মানুষকে কামড়ায় না। কেবল স্ত্রী জাতীয় এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এই মশা দৈর্ঘ্যে ৩-৪ মিলিমিটার, সাদা কালো রঙে মিশেল। পরিষ্কার স্থির পানি। যেমন- ফুলের টব, ফুলদানি, বালতিতে তিন-চার দিনের জমা পানি, পরিত্যক্ত টায়ারে জমা পানি, পরিত্যক্ত কোন পাত্রে জমানো পানি, ছাদ বা সানসেটে জমা পানি- এসব জায়গায় স্ত্রী জাতীয় মশা ডিম ছাড়ে। তবে প্রায় ১০ দিন পর পূর্ণাঙ্গ মশা আত্মপ্রকাশ করে। এই মশাটি সাধারনত রাতে কামড়ায় না, দিনের বেলায় মানুষকে কামড়ায়। একজন মানুষের দেহ থেকে স্ত্রী এডিস মশা ভাইরাস গ্রহণ করে নিজের লালাগ্রন্থিতে জমা রাখে, তারপর সুস্থ্য মানুষকে কামড়িয়ে এই ভাইরাস দান করে। কিন্তু মশা নিজে কখনোই এ ভাইরাস দ্বারা আক্রামত্ম হয় না। মশাটি সাধারনত ৬৫ দিন বাঁচে। একবার আক্রামত্ম মানুষকে কামড়ানোর ১৫ দিন পর থেকে আমৃত্যু এই মশা অন্য মানবদেহে ডেঙ্গু ভাইরাস বিতরণ করে।
 
ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ
সুস্থ দেহে ভাইরাস প্রবেশের পর ২-৭ দিন পর রোগর লক্ষন শুরম্ন হতে পারে। এ রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রামত্ম হয় শিশু ও প্রাপ্তবয়স্করা। প্রাথমিক অবস্থায় (Prodromal Phase) শরীর ম্যাজম্যাজ ভাব, মাথাব্যাথা পরিলক্ষিত হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগীদের কোনো লক্ষন দেখা যায় না।
যাদের রোগের লক্ষন দেখা দেয় তা সাধারণত নিমণরম্নপ হয়ে থাকে-
  • ক্লাসিক ডেঙ্গু জ্বর।
  • ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বর বা ডেঙ্গু শক ডিন্ড্রোম।
এখানে ক্লাসিক ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে বিসত্মারিত জানার চেষ্টা করব।
 
লক্ষনগুলো কী হতে পারে
  • হটাৎ করে শরীরের তাপমাত্রা তীব্রভাবে বেড়ে যেতে পারে। এটা একনাগাড়ে ৫-৭ দিন থাকতে পারে অথবা ৩-৪ দিন পর তাপমাত্রা বাড়তে পারে, এভাবে মোট ৭-৮ দিন চলতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞারে ভাষায় Biphasic ও Saddleback বলা হয়।
  • তীব্র মাথা ব্যাথা, চোখের পেছন দিকে ব্যাথা হতে পারে, যা চোখ নাড়ালে বেড়ে যেতে পারে, চোখ দিয়ে পানি পড়তে পারে, চোখ আলো সংবেদনশীল হতে পারে।
  • মেরম্নদন্ডে প্রচন্ড ব্যাথা হতে পারে, কোমরের দিকে, পায়ের জোড়াগুলোতে খুব ব্যাথা হতে পারে, এটাকে বলা হয় Break Bone Fever।
  • চামড়ায় ছোট ছোট লাল দাগ দেখা দিতে পারে, এই দাগ প্রথমে বুকে বা বাহুতে দেখা দেয়, তারপর তৃতীয়-পঞ্চম দিনে পেটে দেখা দিতে পারে, লক্ষণীয় এই লাল দাগ হাতের তালবিা পায়ের তালুতে কখোনই দেখা যাবে না।
  • ক্ষুদা মন্দা ভাব, বমি বমি ভাব থাকতে পারে।
  • কারো কারো ক্ষেত্রে লসিকাগ্রন্থি ফুলে যেতে পারে।
  • অল্প রক্ত ক্ষরণ হতে পারে কিছু ক্ষেত্রে- যেমন দাঁতের মাড়ি থেকে, নাক দিয়ে সামান্য রক্তক্ষরণ , বমির সাথে কিছুটা রক্ত আসতে পারে, মুথগহবরে তালুতে (Soft Palate) রক্ত জমাট বেধেঁ ছোট ছোট বিন্দুর মতো দেখা দিতে পারে।
  • জ্বর ছেড়ে যাওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর্যমত্ম দুর্বল ভাব, অস্বসিত্ম অনুভব, সব কিছুতে অনীহহা থাকতে পারে।
এখানে লক্ষণীয় যে, ক্ল্যাসিক ডেঙ্গু জ্বরে কখনোই কাশি থাকতে পারে না।
এই রোগ নির্ণয়ের জন্য কিছু পরীক্ষা করা যেতে পারে, যেমন-
  • রক্তের শ্বেতকণিকা, অনুচক্রিকার পরিমাণ পরীক্ষা করে স্বাভাবিকের চেয়ে কম পাওয়া যেতে পারে।
  • টিস্যু কালচার করে ডেঙ্গু ভাইরাস প্রথকীকরণ করা যেতে পারে।
  • Immunoglobulin এ antibody চার গুন পর্যমত্ম বেড়ে যেতে পারে।
ক্ল্যাসিক ডেঙ্গু জ্বরের নিদিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই। প্রচন্ড গা-মাথা ব্যাথা, জ্বরের জন্য শুধু প্যারাসিটামল সেবন করা যেতে পারে। কোনভাবেই অ্যাসপিরিন বা অন্যান্য ব্যাথা নাশক ওষুধ সেবন করা যাবে না। কারন এসব ওষুধ ডেঙ্গু রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারন হতে পারে। প্রচুর পরিমান পানীয় পান করতে হবে। যোকোন সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে। যদি রক্ত ক্ষরণ প্রচুর পরিমানে হয় বা রোগের লক্ষন তীব্র আকারে দেখা দেয় বা রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক মনে হয়, তাহলে অবশ্যই রোগীকে যথাসম্ভব দ্রম্নত হাসপাতালে স্থানামত্মর করতে হবে। ডেঙ্গ হেমোরোজিক জ্বরে সাধারণত শিশুরা বেশি আক্রামত্ম হয়, তাই শিশুদের ব্যাপারে বিশেষভাবে  সাবধান থাকতে হবে। ডেঙ্গু একটি নিয়ন্ত্রনযোগ্য রোগ। আমাদের সবার সচেতনতায় এই রোগ নির্মূল করা সম্ভব। রোগটি যথাযথ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনে আমাদের করণীয়:
  • পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করা।
  • ডেঙ্গুবিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা।
  • প্রতিটি বাড়ি ও স্থাপনার আশেপাশের জায়গা-জমি পরিস্কার রাখা।
  • সব ড্রেন, খাল-নদীনালার প্রবাহ চলমান রাখা।
  • পুকুর, ডোবা আবর্জনামুক্ত রেখে মাছ চাষের ব্যবস্থা করা।
  • বড়ির ভেতরের পানির ট্যাঙ্ক, মসেপটিক ট্রাঙ্ক নিয়মিত পরিস্কার ও মশার বিচরণমুক্ত রাখা।
  • ফুলের টর, অব্যাহৃত টায়ার, পানির পাত্র ইত্যাদিতে পানি জমতে না দেয়া।
  • পরিবেশবান্ধব ইনসেক্টিসাইড স্প্রে ব্যবহার করে মশা নিধন করা।
  • দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা। এ ব্যাপারে শিশুদের প্রতি বিশেষভাবে যত্নশীল হতে হবে।
  • নিজ নিজ এলাকার ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ দেখা দিলে ভীত না হয়ে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করা।
কারোর একবার ডেঙ্গু নির্ণীত হলে সাধারণত আর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রামত্ম হওয়ার আশঙ্কা থাকে না, যদি ভবিষ্যতে আক্রামত্ম হয় তাহলে তা কোনো কোনো ক্ষেত্রে মারাত্মক হতে পারে। এই রোগে মৃত্যু হার শতকরা ১০ ভাগ। সুতরাং ডেঙ্গকে ভয় না পেয়ে আসুন আমরা সবাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতন ও সচেষ্ট হই।
 
দৈহিক বর্ধনে আয়রন ও বি ভিটামিনের ভূমিকা
Tunted growth of children উন্নয়নশীল দেশসমূহের জন্য একটি Common problem বয়সের তুলনায় প্রয়োজনীয় উচ্চতা না থাকাই Stunted growth Stunted বাচ্চারা losted height করে না, এমনকি প্রয়োজনীয় body weight ও এদের থাকে না। Stunted বাচ্চাদের Vital organ সমূহের পরিপূর্ন বিকাশ ঘটে না এবং পরে এরা অকাল মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়। শিশুদের Proper growth and development এ জিংক অনেক গুরম্নত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া ভিটামিন- বি কমপেস্নক্স ও শিশুদের growth and development এ উলেস্নখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। Stunted শিশুদের ক্ষেত্রে এক গবেষনায় দেখা গেছে, ৬ মাস জিংক সাপিস্নমেন্ট গ্রহনের ফলে তাদের height 7 cm পর্যমত্ম বেড়ে যায়, .অন্য দিকে পস্নাসিবো বাড়ায় ২.৯ সে.মি। আর একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, জিংক সাপিস্নমেন্ট Stunted শিশুদের Body weight ও উলেস্নখযোগ্য হারে বাড়ায়। এক্ষত্রে Body weight বৃদ্ধির হার ৮০% পর্যমত্ম হয়ে থাকে। এছাড়া ভিটামিন বি কমপেস্নক্স দেহের জন্য কিছু গুরম্নত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে যেমন- Energy metabolism এ, never function বাড়তে ও বাড়াতে, হিমোগেস্নবিন সংশেস্নষণে। জিং, বি-ভিটামিন এর পাশাপাশি আয়রন ও দেহের জন্য গুরম্নত্বপূর্ণ। আয়রন দেহের জন্য অনেক গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেমন- Blood oxygenation এ Energy metabolism এ, বাচ্চাদের Neurodevelopment এ immune function enhance এ, ভিটামিন বি এর proper utilization এ। সম্প্রতি ইবনে সিনা ফার্মা Biozinc- B (Vit- B complex & Zinc) and Biozinic (Iron polymaltose, Vit- B complex & Zine) নামে ১০০ মিলি এর দু’টি সিরাপ বাজারজাত করার উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী মাস ইবনে সিনার এই নতুন প্রোডাক্ট দুটি বাজারে পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। Orange & banana flavor সমৃদ্ধ দুটি সিরাপ শিশুরা পছন্দ করবে বলে আমাদের ধারাণা। সুদৃশ্য মোড়কে প্রতিযোগীতামূলক দামে up coming এ দুটি প্রোডাক্ট সবার মাঝে গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে আমরা আশা রাখি।
 
ভেষজ
 
অশ্বগন্ধা
সংস্কৃতে অশ্বগন্ধাকে বলা হয় ‘‘ঘোড়ার ঘাম’’। কেননা অশ্বগন্ধার ঘ্রাণ নাকি ঘোড়ার ঘামের মত। আয়ুর্বেদে এই অশ্বগন্ধা ব্যবহৃত হয় উদ্বেগ, উৎকন্ঠা প্রশমনে এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য। কর্মশক্তি ফিরে পেতে এবং সণায়ুবিক দুর্বলতা দূরীকরণে অশ্বগন্ধা মহৌষধ। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অশ্বগন্ধা জিনসেংয়ের এর মতো কার্যকর। সর্বশেষ ভারতে ১০১ জন মধ্য বয়সী লোককে অশ্বগন্ধা খাইয়ে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এতে তাদের বার্ধক্য প্রতিরোধ সম্ভব। এতে কোলেস্টেরল হ্রাস পায়। রক্তে লোহিত কনিকা বৃদ্ধি পেতে থাকে, যা অক্সিজেন সরবরাহ করে। যৌনক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। অন্যান্য জীবযন্তুর উপর অশ্বগন্ধার প্রভাব পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এতে উদ্বেগ ও মানসিক চাপ কমে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং বাত বা আর্থ্রাইটিস ভালো হয়। শরীরের ব্যাথা কমে। ইঁদুরের উপর অশ্বগন্ধার ফলাফল পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তাদের শরীরে এন্টি- অক্সিডেন্ট ভিটামিন এ, সি ও ই বৃদ্ধি পায়। হার্টের পেশির ক্ষতি নিরাময় করে। গবেষণা বলে, অশ্বগন্ধা সিডেটেভ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উদ্বেগ উৎকন্ঠা হ্রাস করে।
 
আদা
University is Miami এক গবেষণায় বলেছে যদি রোজ দুইবার দুই ডোজ আদা বা আদার রস গ্রহণ করা যায়, তাহলে Osteoarthritis এর ব্যাথা দূর হয়। ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯০ জন Osteoarthritis রোগীকে রোজ দু’বার দুই ডোজ আদার রস খাইয়ে দেখেছে, তাদের দুই তৃতীয়াংশের Osteoarthritis এর ব্যাথা দূরীভূত হয়েছে। ব্যাথানাশক বিভিন্ন বড়ির মতোই যে enzyme ব্যাথা সৃষ্টি করে, তা তৈরিতে বাধা দেয়। এ কথা বলেছেন Author of pain Dr. Jacob Tgeitelbaum MD. তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন, এক টুকরা আদা চিবান বা আধ ইঞ্চি আদা বেটে তার রস দিয়ে চা খান। আপনার শরীরের ব্যাথা দূর হবে। এই আদায় ওভারিয়ান ক্যান্সারও নিরাময় হয়। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরিতে টিউমার সেলের সাথে আদা মিশিয়ে দেখা গেছে সেগুলো মারা গেছে।
দারম্নচিনি
দরম্নচিনি আমরা রান্নায় ব্যবহার করি। কিমত্ম এর উপকারীতা সম্বন্ধে কমই জানি। অল্প পরি,ান দারম্নচিনি চিবিয়ে খেলে মসিত্মষ্কের সচেতনতা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। West vieginia এর wheeling jesult university গবেষকরা গবেষনা করে দেখেছেন দারম্নচিনি রক্তের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়, যা মসিত্মষ্কতে উত্তেজিত করে। একবার আপনি এটা খেলে suger metabolism বৃদ্ধি করে এবং রক্তের চর্বি নিয়ন্ত্রণ করে। যুক্তরাষ্ট্রের Department of Agriculture গবেষকরা এর সত্যতা পেয়েছেন। দৈনিক আধা চামচ দারম্নচিনি খেলে ডায়বেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এ কথা বলেন, Dr. Rechard Anderson phD of USDA.
হলুদ
আমরা জানি হলুদ ব্যবহৃত হয় তরকারি রঙ করার জন্য। কিন্তু এর যে উপকারীতা সে সম্বন্ধে খুব কমই জানি। হলুদ বুক জ্বালাপোড়া ও বদহজমের জন্য অত্যমত্ম উপকারী। থাইল্যান্ডের এক গবেষনায় দেখা যায়, শতকরা ৮৭ ভাগ অজীর্ণের রোগীর জন্য হলুদ অত্যমত্ম কার্যকর। এ ছাড়া মাথা ধরাৎ, মাংসপেশির ব্যাথা এবং সন্ধিস্থলের ব্যাথায় হলুদ উপকারী। আলঝেইমার্স রোগ প্রতিরোধ করতে পারে হলুদ। চর্ম বা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে হলুদ কার্যকর। কাঁচা হলুদ বেটে ত্বকে লাগালে ত্বক উজ্বল হয়। Los Angles এর California University হলুদের এব উপকারীতা স্বীকার করেছে।
লাল মরিচ
লাল মরিচ বলতে শুকনা মরিচের কথা বুঝানো হয়েছে। কোনো কাটা জায়গা থেকে রক্ত প্রবাহ কিংবা নাক বন্ধ হয়ে শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হলে লাল মরিচ উপকার করে। এটা নাকের শ্বাস প্রশ্বাসের পথ পরিষ্কার রাখে। ফলে স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস চলে।এই লাল মরিচ প্রস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধক। একথা বলেন, ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা। ইঁদুরের উপর লাল মরিচ প্রয়োগ করে ক্যান্সার প্রতিরোধের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
 
রোগ ব্যাধি
অ্যাজমা
অ্যাজমা কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়।  এটা ফুসফুসের একটা রোগ যার কারণে শ্বাসনালী কোনো কোনো উত্তেজক পদার্থের সংস্পর্শে এলে অতি সংবেদনশীল হয়ে বায়ু প্রবাহের বাধার সৃষ্টি করে। ফলে, কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং বুকে চাপ অনুভূত হয়। অ্যাজমার মূল কারণ এখনো জানা যায়নি। কোন কোন ক্ষেত্রে এটা বংশগত হতে পারে। তবে কিছু উত্তেজক পদার্থ আছে যার সংস্পর্শে এলে অ্যাজমার উপসর্গ বেড়ে যায়। যেমন- ফুলের রেণু, পাখির পালক, পশুর লোম, কার্পেটের পশম, সিগারেটের ধোঁয়া, যানবাহনের ধোঁয়া, ঠান্ডা বাতাস, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ, কিছু কিছু খাবার যেমন- গরম্নর গোমত, হাঁসের ডিম, চিংড়ি মাছ, শ্বাসনালীতে ইনফেকশন, মানসিক দুশ্চিমত্মা, বেদনানাশক ঔষুধ ইত্যাদি।
অ্যাজমার লক্ষণ: কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ অনুভব করা, হাঁচি ইত্যাদি। অনেকে কোনো শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন না, শুধু কাশি হয়, এমনকি কাশিতে রাতে ঘুম ভেঙে যায়-Cough variant asthma.
কেউ কেউ শুধু শীত বা গ্রীষ্মকালে কামি বা শ^াসকষ্ট অনুভব করে- Seasonal asthma.
কোনো কোন শিশু খেলাধূলা করার সময় কাশি বা শ্বাসকষ্ট অনুভব করে- Exercise induced asthma.
অনেকে কোনো বিশেষ ধরনের ঔষুধ খেলে কাশি বা শ্বাসকষ্ট অনুভব করে- Occupational asthma.
অ্যাজমার প্রতিকার: প্রশামিত্ম ভরা শ্বাস, আমাদের প্রয়াস। অ্যাজমা চিকিৎসার মূলমন্ত্র- শিক্ষা, সতর্কতা, চিকিৎসা। অ্যাজমা সম্পূর্ণ ভালো হয় না, তবে নিয়মিত এবং পরিমিত ঔষুধ সেবন করলে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। অ্যাজমা প্রতিরোধ করতে হলে যেসব বস্ত্তর সংস্পর্শে এরে অ্যাজমার উপসর্গ বেড়ে যায়, সেস বস্ত্ত পরিত্যাগ করতে হবে। যেমন- ধুলাবালুর সংস্পর্শে না আসা, অ্যালার্জি হয় এরকম খাবার না খাওয়া ইত্যাদি। অ্যাজমা চিকিৎসায় আমরা সাধারণত তিন ধরনের ঔষুধ ব্যবহার করে থাকি। যেমন- প্রশমনকারী ঔষুধ (Reliever drug), প্রতিরোধকারী ঔষুধ (Preventor drug), প্রতিকারকারী ঔষুধ (Protector drug)। যদি কেউ দীর্ঘ দিন যাবৎ প্রতিরোধকারী ঔষুধ সেবন করে (২-৫ বছর), তাহলে ৬০% - ৮০% শিশু এবং ২০% - ৩% বয়স্ক লোক ভালো হতে পারে। তবে কে ভালো হবে এবং কে ভালো হবে না তা আগে থেকে বলা যাবে ন।
 
কিশোরী মাতৃত্ব পরিণতি ও প্রতিকার
সুগন্ধি শৈশব ছাড়িয়ে ১০-১৪ বছর বয়সে একজন নাবালিকা সাবালিকা বা কৈশরে তথা জীবনের এক গুরম্নত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষনে উপস্থিত হয়। যখন তার শরীরে মনে, মননে, মননশীলতায় নানা রকম পরিবর্তন সাধিত হয়। হঠাৎ রজঃস্রাবে সে যেমন আতঙ্কিত হয়ে ওঠে, তেমনি হঠ্যাৎ বেড়ে উঠা

জেনারেল স্বাস্থ্য
শিশু স্বাস্থ্য
For Ad
নারী স্বাস্থ্য
পুরুষ স্বাস্থ্য

যেভাবে ইবোলা ভাইরাস ছড়ায়
সাম্প্রতিক রোগ
বদভ্যাসে কিডনি বেহাল
শিশুর ওষুধ সেবনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
শিশু স্বাস্থ্য
শিশুর বমি
শিশুদের জন্মগত হৃদরোগ
পুরুষের যৌন প্রবৃত্তি বাড়ায় মসলাদার খাবার
জোড়ার আঠালো পদার্থ শুকিয়ে গেলে
ফুসফুস ক্যানসার চিকিৎসায় ‘মাইলফলক’
ত্বকে ক্রিম লাগাবেন যেভাবে
তিন লিটার পানি বয়স কমাল ১০ বছর
গর্ভবতী মা কখন ও কতবার যাবেন চিকিৎসকের কাছে?
খাদ্য ও পুষ্টি
গরমে লেবুর সরবত
রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু টিপস
রক্তের চর্বি কমানোর জন্য খাদ্যের নিয়ম
কলেরা প্রতিরোধে কম দামি সফল টিকা
হঠাৎ বৃষ্টি ও গরমে ঠান্ডা-জ্বর হলে কি করবেন
কৃমিনাশক ওষুধ সেবনের উত্তম যে সময়
রোজাদার রোগীদের ওষুধপথ্য ও সতর্কতা অবলম্বন
অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধের ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
আদা
প্রশ্নোত্তর : রক্তচাপ
আপনার প্রশ্ন বিশেষজ্ঞের উত্তর
প্রশ্নোত্তর- বিষয়: কিডনি রোগ
হাততালিও হতে পারে প্রতিদিন সুস্থ থাকার হাতিয়ার
প্রতিনিয়ত দাঁতের ক্ষতি যেভাবে করি
গরমে স্বাস্থ্য- সচেতনতা
মস্তিষ্কে কি ঘটে, যখন নারী মাতৃত্ব লাভ করেন
একরাতেই ব্রণ দূর করার কৌশল
মরণব্যাধি ক্যান্সারের যে ১০ টি সতর্কীকরণ ল¶ণ অবহেলা করবেন না
দীর্ঘ ভ্রমণে স্বাস্থ্য সতর্কতা
ভ্রমণে স্বাস্থ্য সতর্কতা
টিনএজারদের ব্রণ সমস্যা ত্বকের সৌন্দর্যহানীর জন্য দায়ী
স্ক্যাবিস বা চুলকানি প্রতিরোধে করণীয়
ত্বকের যেসব রোগে চিকিৎসা একান্ত দরকার
হৃদরোগ প্রতিরোধে আপনি যা করবেন
হৃদরোগ প্রতিরোধে আপনি যা করবেন
প্রচন্ড গলাব্যথা ও টনসিলে ইনফেকশন
নাক-কান-গলার ক্যান্সার হতে সতর্ক ও সাবধান হওয়া
হঠাৎ কানের পর্দায় আঘাত পেলে
পেপটিক আলসারের আদ্যোপান্ত
অ্যালার্জি ও হাঁপানির থেকে পরিত্রাণ
কাশি যখন সমস্যা
দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের অন্যতম কারণ যখন রেটিনা
চোখের নিচের কালো দাগ কমানোর উপায় (১১ অক্টোবর বিশ্ব দৃষ্টি দিবস)
চোখ উঠলে যা করবেন
শীতকালে হাটুর ক্ষতি এড়াতে ১০টি বিষয় জেনে নিন
ঘাড়, মাথা ও বুক ব্যথার লক্ষণ ও চিকিৎসা
সকল প্রকার ব্যথায় কী বাত?
লিভার ডিজিজের অন্যতম ভয়াবহ কারণ এলকোহল
জানুন যকৃতের জন্য ভালো ও মন্দ খাবার কী
ভাইরাল হেপাটাইটিস একটি জটিল ও নিরাময়যোগ্য রোগ (২৮ জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস)
প্রশ্নোত্তরে মানসিক রোগ সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ জেনে নিই। (১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস)
হয়তো আপনার ঘরেই আছে সিজোফ্রেনিয়া রোগী
সিজোফ্রেনিয়া একটি অন্যতম মানসিক রোগ (১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস)
হাত-পায়ে জ্বালাপোড়া অনুভব করলে করণীয়
গেঁটে বাত হলে কী করবেন?
বার্ধক্যে যত ব্যথা-বেদনা
জেনে শুনে যেভাবে দাঁতের ক্ষতি করছেন