শরীর ম্যাজম্যাজ অবস্থা। জ্বরজ্বর লাগে, দুর্বলতা ভর করে। এমন অবস্থায় কি প্রতিদিনের মতো ব্যায়াম করা বা হাঁটা উচিত? এতে কি কোনো ঝুঁকি আছে? উত্তরটা হলো, হ্যাঁ, কিছুটা আছে।
অসুস্থ অবস্থায়, বিশেষত কোনো সংক্রমণে আক্রান্ত হলে শরীরে শক্তি বা ক্যালরি সঞ্চয় করার দরকার হয়। কারণ, এই শক্তি দিয়ে শরীর রোগজীবাণুর সঙ্গে যুদ্ধ করবে। এই সময় বিপাকীয় প্রক্রিয়া (মেটাবলিজম) বেড়ে যায়। ফলে শরীর দ্রুত শক্তি খরচ করে ফেলে ও দুর্বল হয়ে পড়ে। তার ওপর ব্যায়াম করলে শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে। জ্বরের মধ্যে এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি বিপজ্জনক হতে পারে। জ্বর হলে এমনিতেই শরীরে ঘাম বেশি হয়। ব্যায়ামের মাধ্যমে আরও বেশি ঘামলে শরীর আরও বেশি পানি হারাবে। তাই পানিশূন্যতারও ঝুঁকি থাকে। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াজাতীয় সংক্রমণে রক্তচাপ কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ সময় ব্যায়াম করলে রক্তচাপ আরও কমবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যাঁরা সাধারণত নিয়মিত হাঁটেন, যেমন ডায়াবেটিসের রোগী, তাঁরা অসুস্থতার মধ্যে বেশি ব্যায়াম করলে দ্রুত পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হতে পারেন। এ ছাড়া তাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রাও আকস্মিক কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই এ সময় তাঁদের পর্যাপ্ত বিশ্রাম দরকার।
শরীর যথেষ্ট সুস্থ-সবল থাকলে হালকা সর্দি জ্বর বা ফ্লু হলেও হালকা ব্যায়াম করতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন, প্রচুর পানি পান করতে হবে এবং ব্যায়ামের মাত্রা কমিয়ে আনতে হবে। অতিরিক্ত জ্বর, শ্বাসকষ্ট, কাশি, মাথা ঘোরা, ডায়রিয়া বা বমি থাকলে বিশ্রাম নেওয়াই শ্রেয়। যেকোনো জ্বর বা সংক্রমণে পর্যাপ্ত বিশ্রাম, পুষ্টিকর খাবার ও প্রচুর তরল খাবার জরুরি। তাই জ্বর–জারির সময় কয়েক দিন ব্যায়াম বা হাঁটা বন্ধ রাখাই ভালো। তবে অনেক সময় শুয়ে থাকতে থাকতে হাত–পা ম্যাজম্যাজ করলে শুয়ে শুয়ে কিছু হালকা ব্যায়াম (মাস স্ট্রেচিং) করতে পারেন। এতে শরীরের জড়তা কাটবে।