স্বাস্থ্য বার্তা

মোটাতাজা করা গরুতে অধিক স্বাস্থ্যঝুঁকি

গরু মোটাতাজাকরণ একটি নিয়মিত ও প্রচলিত পদ্ধতি। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আমাদের দেশের খামারিরা গরু মোটাতাজাকরণের পরিকল্পনা নেন।
 
যদিও মোটাতাজাকরণের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত স্বীকৃত পদ্ধতি রয়েছে। গরু দ্রুত মোটা ওজনদার করার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই খামারিরা অনৈতিকভাবে স্টেরয়েডসহ বেশকিছু হরমোন প্রয়োগ করে থাকেন। তাদের কাছে বেশি ওজন মানেই বেশি মাংস; বেশি মাংস মানেই বেশি লাভ।

গবেষকরা বলছেন, হরমোন প্রয়োগে মোটাতাজা করা এ সব পশুর মাংস খেলে মানুষের ব্রেস্ট, কোলন, প্রোস্টেট এবং ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার আশংকা রয়েছে।

এ পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াজাত দুই থেকে আড়াই কেজি ইউরিয়া, লালিগুড় ও খড়ের একটি বিশেষ ধরনের মিকচার খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকে সরকারের প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

টানা ৮ দিন কোনো পাত্রে এ মিকচার মুখবন্ধ অবস্থায় রাখার পর, তা রোদে শুকিয়ে গরুকে খাওয়াতে হয়। একটানা ৬ মাস এটা খাওয়ালে খুব দ্রুত গরু মোটাতাজা হয়ে ওঠে। আরও দ্রুত এবং আরও বেশি মোটাতাজা করার আশায় খামারিরা স্টেরয়েডসহ আরও কিছু হরমোন এবং মাত্রাতিরিক্ত ইউরিয়া প্রয়োগ করে থাকে।

বাড়তি ইউরিয়ায় গরুর বিষক্রিয়া

কোরবানিতে দ্রুত মোটাতাজাকরণের উদ্দেশে গরুগুলোকে অতিরিক্ত ইউরিয়া খেতে দেয়া হয়। গরুকে কয়েক মাস ধরে ইউরিয়া খাওয়ালে গরু দ্রুত দানব আকৃতি ধারণ করে।

এর ফলে গরুর শরীরের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিডনি, লিভার, ব্রেইন নষ্ট হয়ে গরুর মৃত্যুকে অনিবার্য করে তোলে।

অতিরিক্ত ইউরিয়া বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করে। ফলে গরু প্রাকৃতিকভাবে বেঁচে থাকার শক্তি হারিয়ে ফেলে। অনেক সময় হাটেই এ সব গরু মারা যায়।

এ ধরনের গরুকে বিষাক্ত গরু বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। ইউরিয়া বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত গরুর মাংস খেলে মানুষও ইউরিয়া বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। ফলে কিডনি বিকল হওয়ার মতো ঝুঁকিও থাকে।

হরমোন ইনজেকশনের ইতিহাস

গরু মোটাতাজাকরণের ইতিহাস খুঁজলে অনেক আগে থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কৃত্রিমভাবে তৈরি হরমোন প্রয়োগ করা হয়েছে।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গরুর মাংসপেশিতে হরমোন ইনজেকশন দেয়া হয় কিংবা কানের চামড়ার নিচে পুঁতে দেয়া হয়। কানের চামড়ার নিচে পুঁতে দেয়া এই হরমোন ধীরে ধীরে একটা নির্দিষ্ট মাত্রায় শরীরে প্রবেশ করে থাকে। কৃত্রিমভাবে তৈরি ইস্ট্রোজেন এবং টেসটোসটেরন ইনজেকশনই এক সময় বেশি প্রয়োগ করা হতো।

সত্তর দশকের দিকে এই হরমোনের একটি উপাদান ডাই ইথাইলস্টিলবেস্টেরলের সঙ্গে যোনীপথের ক্যান্সার সৃষ্টির যোগসূত্র ধরা পড়লে তা নিষিদ্ধ করা হয়। এদিকে ইস্ট্রোজেনের সঙ্গে স্তন ক্যান্সারের সম্পর্ক থাকার বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার পর এই হরমোনটির প্রয়োগও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।

বর্তমানে ব্যবহৃত হরমোন এবং এর ঝুঁকি নিয়ে বিতর্কের ঝড় আরও বেশি নিরাপদ হরমোন খুঁজতে গিয়ে তৈরি হয় বোভাইন সোমাটোট্রপিন (বিএসটি) অথবা রিকম্বিনেন্ট বোভাইন গ্রোথ হরমোন (আরবিজিএইচ)।

১৯৯৩ সালে আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) গরুর দুধ ও গরুর দৈহিক বৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য কৃত্রিমভাবে তৈরি এই হরমোনের প্রয়োগকে অনুমোদন দিলেও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, কানাডাসহ বেশকিছু দেশ তা অনুমোদন দেয়নি।

কিছু কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, হরমোন ব্যবহার গরুর জন্যই ক্ষতিকর। এ সব হরমোন ব্যবহারে গরুর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশনের প্রবণতা বেড়ে যায়। ফলে গরুকে বিভিন্ন ধরনের এন্টিবায়োটিক দিতে হয়। এন্টিবায়োটিকের উচ্ছিষ্ট অংশ গরুর মাংসেও বিদ্যমান থাকে।

এ ধরনের গরুর মাংস খাওয়ার কারণে উচ্ছিষ্ট এন্টিবায়োটিকের প্রভাবে মানুষের শরীর ওই এন্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষমতা অর্জনকারী (রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়া) জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়, যা ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে।

হরমোনের চূড়ান্ত অপব্যবহার আমাদের দেশে গরু মোটাতাজা করার বিজ্ঞানসম্মত ফর্মুলাকে উপেক্ষা করে কিছু অসাধু খামারি বেশি মুনাফার লোভে গরুর শরীরে ২৫ থেকে ৩০ আউন্স উচ্চমাত্রার স্টেরয়েড ইনজেকশন দিয়ে থাকেন।

ওরাডেকসন ও ডেকাসনের মতো স্টেরয়েড দিলে ২-৩ মাসের মধ্যেই গরুগুলো বিশাল আকৃতি ধারণ করে। গরুর শরীরে পানি জমতে থাকে। গরু ফুলে-ফেঁপে বিশাল আকৃতির দানবে পরিণত হয়। প্রাণীবিদরা বলছেন, এ ধরনের গরু দেখলেই চেনা যায়।

প্রাকৃতিকভাবে শক্তি-সামর্থ্যরে কোনো গরু যেমন তেজী ও গোয়ার প্রকৃতির হয়, এই গরুগুলো ঠিক উল্টোভাব, ধীর ও শান্ত প্রকৃতির হয়ে থাকে। শরীরে ও আচরণে কোনো তেজী ভাবই লক্ষ্য করা যায় না। এ সব হরমোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের দেশেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, রয়েছে শাস্তির বিধানও।

তা সত্ত্বেও প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না গরুর ক্ষেত্রে হরমোনের চূড়ান্ত অপব্যবহার। তাই হতে হবে সতর্ক। এখনই সাবধান হোন।

ডা. সজল আশফাক


 

জেনারেল স্বাস্থ্য
শিশু স্বাস্থ্য
For Ad
নারী স্বাস্থ্য
পুরুষ স্বাস্থ্য

যেভাবে ইবোলা ভাইরাস ছড়ায়
সাম্প্রতিক রোগ
বদভ্যাসে কিডনি বেহাল
শিশুর ওষুধ সেবনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
শিশু স্বাস্থ্য
শিশুর বমি
শিশুদের জন্মগত হৃদরোগ
পুরুষের যৌন প্রবৃত্তি বাড়ায় মসলাদার খাবার
জোড়ার আঠালো পদার্থ শুকিয়ে গেলে
ফুসফুস ক্যানসার চিকিৎসায় ‘মাইলফলক’
ত্বকে ক্রিম লাগাবেন যেভাবে
তিন লিটার পানি বয়স কমাল ১০ বছর
গর্ভবতী মা কখন ও কতবার যাবেন চিকিৎসকের কাছে?
খাদ্য ও পুষ্টি
গরমে লেবুর সরবত
রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু টিপস
রক্তের চর্বি কমানোর জন্য খাদ্যের নিয়ম
কলেরা প্রতিরোধে কম দামি সফল টিকা
হঠাৎ বৃষ্টি ও গরমে ঠান্ডা-জ্বর হলে কি করবেন
কৃমিনাশক ওষুধ সেবনের উত্তম যে সময়
রোজাদার রোগীদের ওষুধপথ্য ও সতর্কতা অবলম্বন
অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধের ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
আদা
প্রশ্নোত্তর : রক্তচাপ
আপনার প্রশ্ন বিশেষজ্ঞের উত্তর
প্রশ্নোত্তর- বিষয়: কিডনি রোগ
হাততালিও হতে পারে প্রতিদিন সুস্থ থাকার হাতিয়ার
প্রতিনিয়ত দাঁতের ক্ষতি যেভাবে করি
গরমে স্বাস্থ্য- সচেতনতা
মস্তিষ্কে কি ঘটে, যখন নারী মাতৃত্ব লাভ করেন
একরাতেই ব্রণ দূর করার কৌশল
মরণব্যাধি ক্যান্সারের যে ১০ টি সতর্কীকরণ ল¶ণ অবহেলা করবেন না
দীর্ঘ ভ্রমণে স্বাস্থ্য সতর্কতা
ভ্রমণে স্বাস্থ্য সতর্কতা
টিনএজারদের ব্রণ সমস্যা ত্বকের সৌন্দর্যহানীর জন্য দায়ী
স্ক্যাবিস বা চুলকানি প্রতিরোধে করণীয়
ত্বকের যেসব রোগে চিকিৎসা একান্ত দরকার
হৃদরোগ প্রতিরোধে আপনি যা করবেন
হৃদরোগ প্রতিরোধে আপনি যা করবেন
প্রচন্ড গলাব্যথা ও টনসিলে ইনফেকশন
নাক-কান-গলার ক্যান্সার হতে সতর্ক ও সাবধান হওয়া
হঠাৎ কানের পর্দায় আঘাত পেলে
পেপটিক আলসারের আদ্যোপান্ত
অ্যালার্জি ও হাঁপানির থেকে পরিত্রাণ
কাশি যখন সমস্যা
দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের অন্যতম কারণ যখন রেটিনা
চোখের নিচের কালো দাগ কমানোর উপায় (১১ অক্টোবর বিশ্ব দৃষ্টি দিবস)
চোখ উঠলে যা করবেন
শীতকালে হাটুর ক্ষতি এড়াতে ১০টি বিষয় জেনে নিন
ঘাড়, মাথা ও বুক ব্যথার লক্ষণ ও চিকিৎসা
সকল প্রকার ব্যথায় কী বাত?
লিভার ডিজিজের অন্যতম ভয়াবহ কারণ এলকোহল
জানুন যকৃতের জন্য ভালো ও মন্দ খাবার কী
ভাইরাল হেপাটাইটিস একটি জটিল ও নিরাময়যোগ্য রোগ (২৮ জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস)
প্রশ্নোত্তরে মানসিক রোগ সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ জেনে নিই। (১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস)
হয়তো আপনার ঘরেই আছে সিজোফ্রেনিয়া রোগী
সিজোফ্রেনিয়া একটি অন্যতম মানসিক রোগ (১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস)
হাত-পায়ে জ্বালাপোড়া অনুভব করলে করণীয়
গেঁটে বাত হলে কী করবেন?
বার্ধক্যে যত ব্যথা-বেদনা
জেনে শুনে যেভাবে দাঁতের ক্ষতি করছেন