এ সময়টায় শিশুর সর্দি লাগার মতো সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। নবজাতক থেকে শুরু করে স্কুলগামী শিশু—সবার মা-বাবা এই হঠাৎ সর্দির সমস্যা নিয়ে পাড়ার মোড়ের ফার্মেসির দোকানদার থেকে শুরু করে নামী শিশু বিশেষজ্ঞের চেম্বারে পর্যন্ত ঢুঁ মারেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হঠাৎ সর্দি সাধারণ সর্দি-কাশি অথবা অ্যালার্জির উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়।
অ্যালার্জিজনিত সমস্যার ক্ষেত্রে পরিবারের কোনো সদস্য, বিশেষ করে মা-বাবার অ্যালার্জিজনিত সমস্যা থাকতে পারে। অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ এবং নাকের ড্রপ ব্যবহারের মাধ্যমে এই সমস্যার প্রতিকার মেলে। তবে শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া শিশুকে কোনো ওষুধ সেবন করানো থেকে বিরত থাকুন।
কিছু ক্ষেত্রে এসব সাধারণ সমস্যা থেকে পরে আরও বড় রোগের সূত্রপাত হয়। প্রথম দিকে সমস্যাটি সাধারণই থাকে। শুরু হতে পারে সর্দি, সামান্য জ্বর এবং বুকে সামান্য ঘরঘর শব্দ নিয়ে। শিশুর বয়স ৬ মাস থেকে ২ বছরের মধ্যে হলে এ সমস্যার প্রথম কারণ হিসেবে ভাইরাসজনিত রোগ ব্রঙ্কিওলাইটিস চিন্তা করা হয়। এটি সর্বোচ্চ ৪-৫ দিন থাকে এবং সাধারণ অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধে নিরাময় হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে আরও জটিল সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, যেমন শ্বাসকষ্ট কিংবা বুকের খাঁচা দেবে যাওয়া। এমন জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে দেরি না করে অবশ্যই শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে। তিনি প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা দেবেন, প্রয়োজনবোধে নেবুলাইজারের মাধ্যমে রোগ প্রশমনের চেষ্টা করবেন।
সাধারণ সর্দি যদি প্রচণ্ড জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সঙ্গে দেখা দেয়, তবে কারণ হিসেবে নিউমোনিয়াকেই ধরে নেওয়া হয়। নিউমোনিয়া যেকোনো বয়সেই হতে পারে। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট, বুকের খাঁচা দেবে যাওয়া, সঙ্গে শিশু যা খায় তা-ই বমি করে ফেলা, ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়া, এমনকি খিঁচুনি হওয়া—এই লক্ষণগুলোকে বিপদচিহ্ন হিসেবে ধরে তৎক্ষণাৎ শিশু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। প্রয়োজনবোধে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।
সর্দি-কাশি হলে শিশুকে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করানো যাবে স্বাভাবিক নিয়মেই। স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতেও গোসল করানো যেতে পারে।
ডা. ফায়েকাহাফিজ
শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল