কোনো কারণে নির্দিষ্ট সময়টিতে বাসার বাইরে থাকলেও যেন বড়ি সেবন বাদ না পড়ে। জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য খাওয়ার বড়ি সহজলভ্য ও জনপ্রিয়। তবে অনেক সময় খাওয়ার নিয়ম অজানা থাকায় এটি ঠিকমতো কাজ করে না এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যাপার ঘটে। এই জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি প্রতিদিন একই সময়ে সেবন করা উচিত। বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে; প্রয়োজনে বাইরে যাওয়ার সময় ব্যাগে বড়ি রাখা উচিত। কোনো কারণে ওই নির্দিষ্ট সময়টিতে বাসার বাইরে থাকলেও যেন বড়ি সেবন বাদ না পড়ে। জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে মনে করে অনেকে অনাগ্রহ দেখান। প্রচলিত জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির চেয়ে বর্তমানে উদ্ভাবিত বড়ি সেবনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেকটাই কম। জন্মনিয়ন্ত্রণের এই ব্যবস্থা যৌনরোগ প্রতিরোধ না করলেও মাসিকের সময় ব্যথা ও জরায়ুর ক্যানসার প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখে। এমনকি হরমোনজনিত কারণে ব্রণ এবং অনিয়মিত মাসিকের প্রতিকার হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
তবে এটি একাধারে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে সেবন করা ঠিক নয়। বয়স ৩৫ হওয়ার আগেই বন্ধ করে দেওয়া ভালো, নইলে এই বহুল প্রচলিত জন্মনিয়ন্ত্রণব্যবস্থা হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তসঞ্চালনে অসুবিধাসহ জরায়ুমুখে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এমনকি পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার কারণও হতে পারে। এই বড়ি যদিও ততটা ওজন বৃদ্ধি করে না, তদুপরি হরমোন গ্রহণে কিছুটা ওজন বৃদ্ধি অনেক সময়ই লক্ষ করা যায়।
যদি কারও অতিরিক্ত ওজন, ওভারি বা ডিম্বথলির টিউমার, মাইগ্রেন, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তসঞ্চালনে অসুবিধা অথবা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক) হয়ে থাকে, তবে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে। অনেক সময় প্রচলিত কিছু ওষুধ এবং অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবন করলে তার কার্যক্ষমতা কমে যায়। তাই অন্য কোনো ওষুধ সেবন করলে চিকিৎসককে জানাতে হবে। কেউ যক্ষ্মার ওষুধ সেবন করলে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি কার্যকর হয় না। তাই এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
ডা. ফাহমিদা তুলি
স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
©2014 Copyright by Micron Techno. All rights reserved.