বাবা-মা’র বয়সের ব্যবধান অটিজমের ঝুঁকি বাড়ায়
কিশোরী মায়েদের শিশু এবং যে সমস্ত বাবা-মা’য়ের মধ্যে বয়সের ব্যবধান বেশি তাদের সন্তানদের অটিজমে ভোগার ঝুঁকি বেশি। ৫টি দেশে ৫৭ লাখ শিশুর ওপর গবেষণা চালিয়ে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণায় এও বলা হয়েছে, বেশি বয়সী বাবা-মায়ের সন্তানদেরও অটিজমে ভোগার ঝুঁকি বেশি। এর আগে এক গবেষণায় বলা হয়েছিল, বাবার বেশি বয়স শিশুর অটিজমের ঝুঁকি বাড়ায়। পরবর্তীতে একটি জিন গবেষণায় এর সত্যতা প্রমাণিত হয়।
আর এবারের গবেষণায় প্রথমবারের মত দেখা গেছে যে, বাবা এবং মায়ের মধ্যকার বয়সের পার্থক্যের কারণেও শিশুর অটিজমের ঝুঁকি বাড়ে।
নিউইয়র্ক সিটির মাউন্ট সিনাইয়ে আইকন স্কুল অব মেডিসিনের গবেষক আব্রাহাম রিচেনবার্গ এই তথ্যগুলো জানিয়েছেন। তবে বিষয়টি ভালভাবে বুঝতে হলে এ নিয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
মলিক্যুলার সাইকিয়াট্রি জার্নালে গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষণায় ডেনমার্ক, ইসরাইল, নরওয়ে, সুইডেন এবং পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় ৩০ হাজারেরও বেশি অটিস্টিক শিশুসহ ৫,৭৬৬,৭৯৪ জন শিশুর মধ্যে অটিজমের হার খতিয়ে দেখেছেন গবেষকরা। এই শিশুদের জন্ম হয়েছে ১৯৮৫ এবং ২০০৪-এর মধ্যে। গবেষকরা ২০০৯ সাল পর্যন্ত তাদের বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করেছেন। অটিজম নির্ণয়ের জাতীয় স্বাস্থ্য রেকর্ডও খতিয়ে দেখেছেন তারা।
এতে দেখা গেছে, বেশি বয়সী বাবা, বেশি বয়সী মা এমনকি বাবা ও মায়ের মধ্যে বেশি বয়সের ব্যবধানও শিশুর অটিজমের ঝুঁকি বাড়ায়।
২০-এর কোঠার বাবার সন্তানদের তুলনায় ৫০ বছরের বেশি বয়সী বাবার সন্তানদের মধ্যে অটিজমের হার ৬৬ শতাংশ বেশি। আর বাবার বয়স ৪০-এর ঘরে হলে এ হার ২৮ শতাংশ বেশি। যে সমস্ত মায়ের বয়স ৪০-এর ঘরে তাদের শিশুদের অটিজমের হার ২০-এর কোঠার মায়েদের সন্তানদের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। আর কিশোরী মায়েদের সন্তানদের ক্ষেত্রে এ হার ১৮ শতাংশ বেশি।
বাবা এবং মা দু’জনই বেশি বয়স্ক হলেও শিশুদের অটিজমের ঝুঁকি বাড়ে। তাছাড়া বাবা এবং মা’য়ের মধ্যে বয়সের পার্থক্য বেশি হলেও শিশুদের অটিজমে ভোগার ঝুঁকি বেশি বলেই জানাচ্ছেন গবেষকরা। গবেষণার ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, যেসব বাবার বয়স ৩৫ থেকে ৪৪-এর মধ্যে এবং মা তার চেয়ে ১০ বছরের ছোট কিংবা আরো কমবয়সী— তাদের সন্তানদের ক্ষেত্রে অটিজমে ভোগার হার সবচেয়ে বেশি।বাবা-মা’র বয়সের ব্যবধান অটিজমের ঝুঁকি বাড়ায়