স্বাস্থ্য বার্তা

পেট ব্যথা ও যকৃতে ফোঁড়া হলে করণীয়

শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ইনফেকশন সৃষ্টিকারী জীবাণু ও বিভিন্ন অঙ্গের ভেতরে অনুপ্রবেশকারী পরজীবীগুলোকে সাধারণত চারটি বড় ভাগে ভাগ করা হয়। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, প্রটোজোয়া এবং প্যারাসাইট। এর মধ্যে ভাইরাস অতি আণুবীক্ষণিক জীব যা কেবল অন্য কোষের মধ্যে প্রবেশ করেই বংশ বিস্তার করতে পারে।

ব্যাকটেরিয়া হল আণুবীক্ষণিক এককোষী জীব যার সুগঠিত নিউক্লিয়াস নেই। প্রটোজোয়া হল এককোষী আণুবীক্ষণিক জীব যার কোষে সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে এবং প্যারাসাইট (বা পরজীবী) হল বহুকোষী ক্ষুদ্র জীব যা কেবল অন্য জীবের দেহ থেকে জৈবরস নিয়ে বেঁচে থাকে।

শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো আমাদের লিভার ও পিত্তথলিতে জীবাণু ও পরজীবীগুলো ইনফেকশন করে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। লিভার বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও প্রটোজোয়া দিয়ে আক্রান্ত হতে পারে। ইনফেকশনের সবচেয়ে সাধারণ (কমন) কারণ হল হেপাটাইটিস ভাইরাস। এই ভাইরাসগুলোর লিভার কোষের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ থাকে বিধায় এদের বলা হয় হেপাটোট্রফিক ভাইরাস। হেপাটো শব্দটি গ্রীক ‘হেপার’ শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ হল লিভার। আমরা জানি, হেপাটাইটিস ভাইরাস জনিত লিভার প্রদাহ স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। এছাড়াও, স্বল্পমেয়াদি প্রদাহ থেকে হেপাটিক ফেইলিওর এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ থেকে সিরোসিস এবং ক্যান্সারও হতে পারে। হেপাটাইটিস ভাইরাসজনিত প্রদাহ খুব কমন বিধায় এটি নিয়ে জনসচেতনতামূলক আলোচনা ও লেখালেখি বেশি হয়। কিন্তু ভাইরাস ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, প্রটোজোয়া ও প্যারাসাইট দিয়ে লিভার আক্রান্ত হতে পারে। আলোচ্য নিবন্ধে আমরা এ ধরনের কিছু লিভার ইনফেকশন, তার লক্ষণ ও নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা ও তার চিকিৎসা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব।

সাধারণ অবস্থায় ব্যাকটেরিয়া লিভারে প্রবেশ করতে পারে না। তবে খাদ্যনালী ও পিত্তনালীর ইনফেকশন হলে জীবাণু ওই স্থান থেকে যথাক্রমে পোর্টাল ভেইন নামক রক্তনালীর মাধ্যমে ও সরাসরি লিভারে প্রবেশ করতে পারে। এছাড়াও, পিত্তনালী ও থলির বিভিন্ন রোগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চিকিৎসা করতে গিয়ে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও ব্যাকটেরিয়া লিভারে প্রবেশ করতে পারে। ব্যাকটেরিয়া লিভারে কোনো একটি বা একাধিক স্থানে প্রবেশ করে বংশবৃদ্ধি শুরু করলে আক্রান্ত লিভার কোষ নষ্ট হতে থাকে। এ অবস্থায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে উঠে এবং ওই ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে বিভিন্ন ধরনের শ্বেত রক্ত কণিকা পাঠাতে শুরু করে। অসংখ্য শ্বেত রক্ত কণিকা ব্যাকটেরিয়ার কলোনিকে চারদিক থেকে আবৃত করে ফেলে এবং ব্যাকটেরিয়াকে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানের মাধ্যমে ধ্বংস করতে থাকে। এ অবস্থা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে ওই আবৃত এলাকার ভেতরে জীবিত ও মৃত লিভার কোষ, জীবিত ও মৃত ব্যাকটেরিয়া ও বিভিন্ন ধরনের শ্বেত রক্ত কণিকার সমন্বয়ে বিশেষ ধরনের রস (স্যাপ) জমা হতে থাকে, যাকে বাংলায় পুঁজ বলে। ওই পুঁজসমেত আবৃত এলাকাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় হেপাটিক বা লিভার অ্যাবসেস। ঠিক একই প্রক্রিয়ায় Entamoeba histolytica নামক প্রোটোজোয়া দিয়েও লিভারের অ্যাবসেস হতে পারে। ব্যাকটেরিয়াজনিত লিভার অ্যাবসেসকে মেডিকেলের পরিভাষায় বলে পায়োজেনিক লিভার অ্যাবসেস এবং এন্টামিবাজনিত লিভার অ্যাবসেসকে বলে অ্যামিবিক লিভার অ্যাবসেস। ব্যাকটেরিয়াজনিত লিভার অ্যাবসেস এক বা একাধিক স্থানে হতে পারে এবং সাধারণত আকারে বড় হয়। অ্যামিবাজনিত লিভার অ্যাবসেস সাধারণত একটি স্থানেই হয় এবং আকারে বড় হয়।

লিভার অ্যাবসেস-এ আক্রান্ত রোগীর উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর ও পেটের ডান দিকের উপরিভাগে ব্যথা হয়। এছাড়াও পিঠের ডান দিকের উপরিভাগের হাড়ে ব্যথা এবং শুকনো কাশিও থাকতে পারে। লিভারের আকার সাধারণত বড় হয়ে যায় এবং পেটে ধরলে ব্যথা হয়। অ্যামিবিক লিভার অ্যাবসেস-এর তুলনায় পায়োজেনিক লিভার অ্যাবসেস-এ জন্ডিস হওয়ার আশংকা বেশি থাকে। এছাড়াও লিভার অ্যাবসেস থেকে জীবাণু যদি ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে ফুসফুসের আবরণীতে পানি জমতে পারে এবং ফুসফুসে ইনফেকশন ও অ্যাবসেস হতে পারে। ফুসফুসে সমস্যা হলে রোগীর বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও ঘন কফযুক্ত কাশি হতে পারে। লিভার অ্যাবসেস-এর রোগীদের রোগ নির্ণয়ের জন্য মূলত পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো হয়। অ্যাবসেস অনেক ছোট হলে অনেক সময় এমআরআই নামক পরীক্ষাও করানো লাগতে পারে।

লিভার অ্যাবসেস-এর চিকিৎসার জন্য ওষুধ গ্রহণ করার পাশাপাশি সিরিঞ্জ দিয়ে পুঁজ বের করতে হয়। ব্যাকটেরিয়াজনিত অ্যাবসেস-এর ক্ষেত্রে রক্তনালীতে এন্টিবায়োটিক দেয়া হয়। এন্টিবায়োটিক কোনটি দেয়া হবে তা নির্ভর করে সম্ভাব্য ব্যাকটেরিয়ার প্রজাতির ওপর। সাধারণত ২ সপ্তাহ রক্তনালীতে এন্টিবায়োটিক দেয়ার পর ৪ সপ্তাহ মুখে খাওয়ার জন্য এন্টিবায়োটিক দেয়া হয়। অ্যামিবিক লিভার অ্যাবসেস-এর ক্ষেত্রে সাধারণত ৭ থেকে ১০ দিন উচ্চমাত্রায় মেট্রোনিডাজল ইনজেকশন দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। অ্যাবসেস একটি হলে সিরিঞ্জ দিয়ে যতটুকু সম্ভব পুঁজ বের করে ফেলা হয়। অ্যাবসেস একাধিক হলে বড়টির পুঁজ বের করা হয়। ছোট অ্যাবসেসগুলো এন্টিবায়োটিক চিকিৎসাতে এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।

অধ্যাপক মবিন খান   

জেনারেল স্বাস্থ্য
শিশু স্বাস্থ্য
For Ad
নারী স্বাস্থ্য
পুরুষ স্বাস্থ্য

যেভাবে ইবোলা ভাইরাস ছড়ায়
সাম্প্রতিক রোগ
বদভ্যাসে কিডনি বেহাল
শিশুর ওষুধ সেবনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
শিশু স্বাস্থ্য
শিশুর বমি
শিশুদের জন্মগত হৃদরোগ
পুরুষের যৌন প্রবৃত্তি বাড়ায় মসলাদার খাবার
জোড়ার আঠালো পদার্থ শুকিয়ে গেলে
ফুসফুস ক্যানসার চিকিৎসায় ‘মাইলফলক’
ত্বকে ক্রিম লাগাবেন যেভাবে
তিন লিটার পানি বয়স কমাল ১০ বছর
গর্ভবতী মা কখন ও কতবার যাবেন চিকিৎসকের কাছে?
খাদ্য ও পুষ্টি
গরমে লেবুর সরবত
রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু টিপস
রক্তের চর্বি কমানোর জন্য খাদ্যের নিয়ম
কলেরা প্রতিরোধে কম দামি সফল টিকা
হঠাৎ বৃষ্টি ও গরমে ঠান্ডা-জ্বর হলে কি করবেন
কৃমিনাশক ওষুধ সেবনের উত্তম যে সময়
রোজাদার রোগীদের ওষুধপথ্য ও সতর্কতা অবলম্বন
অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধের ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
আদা
প্রশ্নোত্তর : রক্তচাপ
আপনার প্রশ্ন বিশেষজ্ঞের উত্তর
প্রশ্নোত্তর- বিষয়: কিডনি রোগ
হাততালিও হতে পারে প্রতিদিন সুস্থ থাকার হাতিয়ার
প্রতিনিয়ত দাঁতের ক্ষতি যেভাবে করি
গরমে স্বাস্থ্য- সচেতনতা
মস্তিষ্কে কি ঘটে, যখন নারী মাতৃত্ব লাভ করেন
একরাতেই ব্রণ দূর করার কৌশল
মরণব্যাধি ক্যান্সারের যে ১০ টি সতর্কীকরণ ল¶ণ অবহেলা করবেন না
দীর্ঘ ভ্রমণে স্বাস্থ্য সতর্কতা
ভ্রমণে স্বাস্থ্য সতর্কতা
টিনএজারদের ব্রণ সমস্যা ত্বকের সৌন্দর্যহানীর জন্য দায়ী
স্ক্যাবিস বা চুলকানি প্রতিরোধে করণীয়
ত্বকের যেসব রোগে চিকিৎসা একান্ত দরকার
হৃদরোগ প্রতিরোধে আপনি যা করবেন
হৃদরোগ প্রতিরোধে আপনি যা করবেন
প্রচন্ড গলাব্যথা ও টনসিলে ইনফেকশন
নাক-কান-গলার ক্যান্সার হতে সতর্ক ও সাবধান হওয়া
হঠাৎ কানের পর্দায় আঘাত পেলে
পেপটিক আলসারের আদ্যোপান্ত
অ্যালার্জি ও হাঁপানির থেকে পরিত্রাণ
কাশি যখন সমস্যা
দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের অন্যতম কারণ যখন রেটিনা
চোখের নিচের কালো দাগ কমানোর উপায় (১১ অক্টোবর বিশ্ব দৃষ্টি দিবস)
চোখ উঠলে যা করবেন
শীতকালে হাটুর ক্ষতি এড়াতে ১০টি বিষয় জেনে নিন
ঘাড়, মাথা ও বুক ব্যথার লক্ষণ ও চিকিৎসা
সকল প্রকার ব্যথায় কী বাত?
লিভার ডিজিজের অন্যতম ভয়াবহ কারণ এলকোহল
জানুন যকৃতের জন্য ভালো ও মন্দ খাবার কী
ভাইরাল হেপাটাইটিস একটি জটিল ও নিরাময়যোগ্য রোগ (২৮ জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস)
প্রশ্নোত্তরে মানসিক রোগ সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ জেনে নিই। (১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস)
হয়তো আপনার ঘরেই আছে সিজোফ্রেনিয়া রোগী
সিজোফ্রেনিয়া একটি অন্যতম মানসিক রোগ (১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস)
হাত-পায়ে জ্বালাপোড়া অনুভব করলে করণীয়
গেঁটে বাত হলে কী করবেন?
বার্ধক্যে যত ব্যথা-বেদনা
জেনে শুনে যেভাবে দাঁতের ক্ষতি করছেন