স্বাস্থ্য বার্তা

মুখের ঘা : চিকিৎসা ও করণীয়

চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় দেখা যায় যে, প্রায় দুইশত রোগের প্রাথমিক লক্ষণ মুখ গহ্বরে দৃষ্টি গোচর হয়। বর্তমানকালের  মরণঘাতী রোগ এইডস থেকে শুরু করে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হূদরোগ এমনকি গর্ভাবস্থায় অনেক লক্ষণ মুখের ভিতরে প্রকাশ পায়।

যেমন একটি রোগীর মুখ পরীক্ষা করে যদি দেখা যায় যে, তার মাড়িতে তীব্র প্রদাহ রয়েছে, মাড়ি ফুলেছে, তাতে পূঁজ জমা হয়েছে, মাড়ি থেকে দাঁত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং সামান্য আঘাতে রক্ত বের হয়ে আসছে তবেই তাকে আমরা পেরিওডেন্টাল ডিজিজ বা মাড়ির রোগ হিসেবে বলতে পারি। অনেক ক্ষেত্রে এই সমস্ত রোগীর ইতিহাস নিয়ে দেখা যায় যে, কয়েক বত্সর যাবত তাদের ডায়াবেটিস এবং তারা নিয়মিতভাবে ইনসুলিন নেন। এই সমস্ত রোগীদের ডায়াবেটিক এসোসিয়েশন থেকে একটি সুন্দর বই দেয়া হয়, তাতে তার একটা মোটামুটি ইতিহাস পাওয়া যায় যেমন- তার রক্তচাপ, অন্যান্য রোগের উপস্থিতি, খাদ্যাভাস সম্পর্কে কিছু প্রয়োজনীয় উপদেশ এবং নিয়মিতভাবে তার রক্তের শর্করা পরীক্ষার ফলাফল- দেখা যায় প্রতিমাসেই তার শর্করা পরীক্ষা করা হয়েছে এবং প্রায়ই রক্তের শর্করা স্বাভাবিকের চাইতে বেশী। জেনে রাখা প্রয়োজন রক্তের শর্করার স্বাভাবিক পরিমাণ হচ্ছে-অভুক্ত অবস্থায় ৬.৪ মিঃ মোল এবং খাবার দু'ঘন্টা পর ৭.৮ মিঃ মোলের কম। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, যে সমস্ত ডায়াবেটিক রোগী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেন না তাদেরই মাড়ির রোগের প্রদাহ বা পেরিওডেন্টাল ডিজিজ অধিকমাত্রায় লক্ষ্যণীয়। তবে তার অর্থ এই নয় যে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদেরই এই রোগ বেশী হবে।

পরীক্ষা করে দেখা গেছে যাদের মুখে ডেন্টাল প্লাক রয়েছে এবং জিনজিভাইটিস রয়েছে তাদের ডায়াবেটিস-এর কারণে মুখের এবং মাড়ির রোগ আরও বেড়ে যায় এবং প্রদাহ আরও তীব্রতর আকার ধারণ করে পরবর্তীতে দাঁতগুলো পড়ে যায় এবং ফেলে দিতে হয়। তাছাড়া আরও একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে মাড়ির প্রদাহের কারণেই ডায়াবেটিস রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয় না এবং রক্তের শর্করাও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে পারে। সুতরাং ভালোভাবে খাদ্যদ্রব্য চিবিয়ে খাওয়ার জন্য যেমন সুস্থ্য মাড়ি ও দাঁতের প্রয়োজন তেমনি ডায়াবেটিস রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও মাড়িকে প্রদাহমুক্ত বা সুস্থ্য রাখা প্রয়োজন। মুখের আরও একটি বিশেষ রোগ মুখের ঘা। মুখের এই ঘা নানা কারণে হতে পারে- যাদের বিভিন্ন রোগ রয়েছে যেমন- ডায়াবেটিস, হূদরোগ, উচ্চরক্তচাপ, রিউমাটিক, রক্তস্বল্পতা, ক্যান্সার, এইডস ইত্যাদি।

যে সমস্ত ঘা হতে পারে সেগুলোর মধ্যে লিউকোপ্লাকিয়া, লাইকেন প্লানাস ইত্যাদি রয়েছে। যারা নিয়মিতভাবে অন্যান্য রোগের চিকিত্সার সাথে ওষুধ খান তাদের মুখেও ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা রোগ প্রতিরোধক শক্তি কম হওয়ায় মুখের ঘা সাময়িকভাবে দেখা দিতে পারে- যা ওষুধ বন্ধের সাথে সাথেই নিরাময় হতে পারে। যেমন গর্ভবর্তী মায়েদের গর্ভাবস্থায় মাড়ির প্রদাহ দেখা যায় এবং গর্ভপাতের সাথে সাথেই তা নিরাময় হয়। তবে এটি সাধারণতঃ হয় হরমোনের তারতম্যের কারণে, তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, মাড়িতে প্লাক জমা রয়েছে কিনা, যদি থাকে তবে তা অবশ্যই স্কেলিং করিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মুখে আরও একটি ঘা সব বয়সেই হতে পারে এর নাম ‘এপথাস আলসার’। বিশেষ কোনো (বি) ভিটামিন স্বল্পতা, কোনো দুঃচিন্তা, অনিদ্রা মুখের অস্বাস্থ্যকর অবস্থা, মানসিক অস্থিরতা ইত্যাদির কারণে এপথাস আলসার বেশী হয়। অনেক সময় এই ঘা আরও প্রকট হয়ে দেখা যায়। তবে উপযুক্ত সময়ে এই ঘায়ের চিকিত্সা করাতে পারলে ভালো। এই রোগের চিকিত্সা হলো দুশ্চিন্তা দূর করা, ঘুম যাতে স্বাভাবিক হয় তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া এবং এক ধরণের ষ্টেরয়েড জাতীয় মলম   ব্যবহার করলে স্থানীয়ভাবে ঐ স্থানে লেগে থেকে ঘা টিকে তাড়াতাড়ি শুকাতে সহায্য করে। আরও একটি কারণে মুখের ঘা দেখা দিতে পারে, সেটি ক্ষয়ে যাওয়া দাঁতের ধারালো অংশ ক্রমাগতভাবে যদি জিহ্বাতে অথবা গালের মাংসে ঘষতে থাকে তবে ঐ স্থানে ঘা হতে পারে। তাছাড়া কৃত্রিম দাঁত, ক্রাউন বা মুকুট, ফিলিং মেটিরিয়াল ইত্যাদির ধারালো অংশের ঘর্ষণেও ঘা হতে পারে।

সুতরাং প্রয়োজন হবে খুব তাড়াতাড়ি ঐ সমস্ত ধারালো দাঁতের চিকিত্সা করা। যেমন ধারালো দাঁতকে যদি ঘষে একটু মসৃণ করে দেয়া যায় অথবা কৃত্রিম দাঁতের ধারালো অংশকে যদি ঘষে দেয়া যায় তবেই নিরাময় সম্ভব এর জন্য বিশেষ কোনো ওষুধের প্রয়োজন নাই। সমপ্রতি আমাদের দেশে এবং পাশ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলোতে (বিশেষতঃ ভারতে) গবেষণায় দেখা যায় যে, যাদের ধূমপান এবং জর্দ্দা পান ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তাদের মধ্যে মুখের ঘা খুব বেশী হয় এবং সেই সাথে মুখের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও বেশী। তবে, যাদের রক্ত পরীক্ষার পর ভিটামিন স্বল্পতা পাওয়া যাবে, তাদেরকে সেই ভিটামিন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেয়া যেতে পারে।

অধ্যাপক ড. অরুপরতন চৌধুরী
মুখ ও দন্ত রোগ বিশেষজ্ঞ
১৫/এ গ্রিন স্কয়ার, গ্রিন রোড
ঢাকা-১২০৫

জেনারেল স্বাস্থ্য
শিশু স্বাস্থ্য
For Ad
নারী স্বাস্থ্য
পুরুষ স্বাস্থ্য

যেভাবে ইবোলা ভাইরাস ছড়ায়
সাম্প্রতিক রোগ
বদভ্যাসে কিডনি বেহাল
শিশুর ওষুধ সেবনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
শিশু স্বাস্থ্য
শিশুর বমি
শিশুদের জন্মগত হৃদরোগ
পুরুষের যৌন প্রবৃত্তি বাড়ায় মসলাদার খাবার
জোড়ার আঠালো পদার্থ শুকিয়ে গেলে
ফুসফুস ক্যানসার চিকিৎসায় ‘মাইলফলক’
ত্বকে ক্রিম লাগাবেন যেভাবে
তিন লিটার পানি বয়স কমাল ১০ বছর
গর্ভবতী মা কখন ও কতবার যাবেন চিকিৎসকের কাছে?
খাদ্য ও পুষ্টি
গরমে লেবুর সরবত
রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু টিপস
রক্তের চর্বি কমানোর জন্য খাদ্যের নিয়ম
কলেরা প্রতিরোধে কম দামি সফল টিকা
হঠাৎ বৃষ্টি ও গরমে ঠান্ডা-জ্বর হলে কি করবেন
কৃমিনাশক ওষুধ সেবনের উত্তম যে সময়
রোজাদার রোগীদের ওষুধপথ্য ও সতর্কতা অবলম্বন
অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধের ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
আদা
প্রশ্নোত্তর : রক্তচাপ
আপনার প্রশ্ন বিশেষজ্ঞের উত্তর
প্রশ্নোত্তর- বিষয়: কিডনি রোগ
হাততালিও হতে পারে প্রতিদিন সুস্থ থাকার হাতিয়ার
প্রতিনিয়ত দাঁতের ক্ষতি যেভাবে করি
গরমে স্বাস্থ্য- সচেতনতা
মস্তিষ্কে কি ঘটে, যখন নারী মাতৃত্ব লাভ করেন
একরাতেই ব্রণ দূর করার কৌশল
মরণব্যাধি ক্যান্সারের যে ১০ টি সতর্কীকরণ ল¶ণ অবহেলা করবেন না
দীর্ঘ ভ্রমণে স্বাস্থ্য সতর্কতা
ভ্রমণে স্বাস্থ্য সতর্কতা
টিনএজারদের ব্রণ সমস্যা ত্বকের সৌন্দর্যহানীর জন্য দায়ী
স্ক্যাবিস বা চুলকানি প্রতিরোধে করণীয়
ত্বকের যেসব রোগে চিকিৎসা একান্ত দরকার
হৃদরোগ প্রতিরোধে আপনি যা করবেন
হৃদরোগ প্রতিরোধে আপনি যা করবেন
প্রচন্ড গলাব্যথা ও টনসিলে ইনফেকশন
নাক-কান-গলার ক্যান্সার হতে সতর্ক ও সাবধান হওয়া
হঠাৎ কানের পর্দায় আঘাত পেলে
পেপটিক আলসারের আদ্যোপান্ত
অ্যালার্জি ও হাঁপানির থেকে পরিত্রাণ
কাশি যখন সমস্যা
দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের অন্যতম কারণ যখন রেটিনা
চোখের নিচের কালো দাগ কমানোর উপায় (১১ অক্টোবর বিশ্ব দৃষ্টি দিবস)
চোখ উঠলে যা করবেন
শীতকালে হাটুর ক্ষতি এড়াতে ১০টি বিষয় জেনে নিন
ঘাড়, মাথা ও বুক ব্যথার লক্ষণ ও চিকিৎসা
সকল প্রকার ব্যথায় কী বাত?
লিভার ডিজিজের অন্যতম ভয়াবহ কারণ এলকোহল
জানুন যকৃতের জন্য ভালো ও মন্দ খাবার কী
ভাইরাল হেপাটাইটিস একটি জটিল ও নিরাময়যোগ্য রোগ (২৮ জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস)
প্রশ্নোত্তরে মানসিক রোগ সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ জেনে নিই। (১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস)
হয়তো আপনার ঘরেই আছে সিজোফ্রেনিয়া রোগী
সিজোফ্রেনিয়া একটি অন্যতম মানসিক রোগ (১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস)
হাত-পায়ে জ্বালাপোড়া অনুভব করলে করণীয়
গেঁটে বাত হলে কী করবেন?
বার্ধক্যে যত ব্যথা-বেদনা
জেনে শুনে যেভাবে দাঁতের ক্ষতি করছেন