শৌচাগারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটিয়েও অনেকের পেট পরিষ্কার হয় না। কোষ্ঠকাঠিন্যের ভয়ে অনেকে নানা ধরনের খাবার খাওয়াই ছেড়ে দেন। মাঝেমধ্যে নানা কারণে আপনার মল কঠিন হতেই পারে। তার মানে আপনি রোগে ভুগছেন, তা নয়। কেউ পর্যাপ্ত আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার পরও যদি সপ্তাহে তিনবারের কম মলত্যাগ করেন, তখনই একে কোষ্ঠকাঠিন্য বলে।
কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য অনেকে মল নরম করার বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, সিরাপ এবং মলদ্বারের ভেতরে দেয়ার ওষুধ প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে থাকেন, যা মোটেও উচিত নয়। নিয়মিত এসব ওষুধ ব্যবহার করলে সেটি অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। এ কারণে মলদ্বারের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা আর থাকে না। তাই কোষ্ঠকাঠিন্যের সঠিক কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা নেয়া উচিত।
কোষ্ঠকাঠিন্যেরকারণ-
আঁশযুক্ত খাবার এবং শাকসবজি কম খাওয়া, পানি কম খাওয়া, দুশ্চিন্তা, কায়িক পরিশ্রমের অভাব, অন্ত্রনালিতে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, মস্তিষ্কে টিউমার ও রক্তক্ষরণ, দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থাকা, বিভিন্ন ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
কোষ্ঠকাঠিন্যেরলক্ষণ: শক্ত ও কঠিন মল, মলত্যাগে অনেক বেশি সময় লাগা, অনেক বেশি চাপের দরকার হওয়া, অধিক সময় ধরে মলত্যাগ করার পরও অসম্পূর্ণ মনে হওয়া, মলদ্বারের আশপাশে ও তলপেটে ব্যথা, প্রায়ই আঙুল, সাপোজিটরি বা অন্য কোনো মাধ্যমে মল বের করার চেষ্টা।
কোষ্ঠকাঠিন্যদূরকরারউপায়: বেশি করে শাকসবজি ও আঁশযুক্ত খাবার খান, বেশি করে পানি পান করুন, দুশ্চিন্তা দূর করুন, যারা সারা দিন বসে কাজ করেন, তারা নিয়মিত ব্যায়াম করুন
কোষ্ঠকাঠিন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা। কিন্তু এর চিকিৎসা না করা হলে কিছু সমস্যা হতে পারে
মল ধরে রাখার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে, পাইলস, এনালফিশার, মলদ্বার বাইরে বের হয়ে আসা, মানসিকভাবে অশান্তি, প্রস্রাবের সমস্যা, খাদ্যনালিতে প্যাঁচ লেগে পেট ফুলে যেতে পারে, খাদ্যনালিতে আলসার বা ছিদ্র হয়ে যেতে পারে।
অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুল হক
বৃহদান্ত্র ও পায়ুপথ সার্জারি বিশেষজ্ঞ,
ইডেন মাল্টিকেয়ার হাসপাতাল, ঢাকা