পাইলসের রোগী সাধারণত ব্যথায় ভোগেন না। দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে পাইলস হতে পারে। বয়স্ক ও গর্ভবতী নারীরা সাধারণত পাইলসে ভোগেন বেশি। অতিরিক্ত স্থূলতাও হতে পারে কারণ। কখনো বারবার পাতলা পায়খানা হওয়ার ফলেও পায়ুপথের সমস্যা হতে পারে। মলত্যাগের পর ব্যবহৃত টয়লেট পেপারে রক্তের ছোপ পাইলসের লক্ষণ হতে পারে। কখনো কখনো নরম গোটা পায়ুপথে বেরিয়ে আসতে পারে। শ্লেষ্মাজাতীয় পদার্থও বেরোতে পারে।
পায়ুপথের ভেতরের অংশ চিরে যাওয়াকে ‘ফিসার’ বলা হয়। এমন হলে মলত্যাগের সময় ব্যথা লাগতে পারে। পায়ুপথের এসব সমস্যা বেশির ভাগ নারী লুকিয়ে রাখেন বা এ নিয়ে কথা বলতে বিব্রত হন। কিন্তু এগুলোর চিকিৎসা সহজ। সব সময় যে অস্ত্রোপচার লাগবে, তা–ও নয়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ আরও সহজ।
কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে। ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন; ভিজিয়ে না রেখে পানিতে ভুসি মেশানোর পরপরই খেয়ে নিন। নিয়মিত ব্যায়াম করুন। মলত্যাগের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলে বাথরুমে যেতে দেরি করা ঠিক নয়; যত দেরি করবেন, অন্ত্রের ভেতর থাকা মল থেকে পানি শোষিত হয়ে মল আরও শক্ত হয়ে যাবে।
যাঁরা এমন সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা চিকিৎসা নিন। অবহেলা করবেন না। অস্বস্তি করবেন না। মনে রাখবেন, যেকোনো সমস্যা প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করানো সহজ, জটিলতার আশঙ্কাও কম।
পায়খানা নরম রাখার সিরাপ, খাওয়ার অন্যান্য ওষুধ, পায়ুপথে ব্যবহারের ওষুধ বা গরম পানিতে বসার মতো সহজ চিকিৎসার মাধ্যমেও আপনি সুস্থ হতে পারেন। একটি বোল বা বাথটাবে কুসুম গরম পানি নিয়ে দিনে তিনবার অথবা প্রতিবার পায়খানার পর ১৫-২০ মিনিট করে কুসুম গরম পানিতে বসলে পায়ুপথের যন্ত্রণা অনেকটাই কমে। পানিতে বসার পর ভেজা অংশ হালকাভাবে মুছে নিতে হয়। চিকিৎসক আপনাকে পরীক্ষা করে কিছু জটিল ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্তও নিতে পারেন। তবে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচারও তেমন জটিল নয়। অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
তবে পায়ুপথে রক্তক্ষরণ অন্য কোনো রোগের লক্ষণও হতে পারে। কয়েকটি সমস্যায় অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সেগুলো হলো: মলের সঙ্গে রক্তক্ষরণ, কালো বা কালচে রঙের পায়খানা, মলত্যাগের স্বাভাবিক নিয়মে হঠাৎ পরিবর্তন, পায়ুপথ বা এর পাশ দিয়ে পুঁজ বা দুর্গন্ধযুক্ত তরল নিঃসরণ, পায়ুপথে ব্যথা বা এর পাশে কোনো গোটা, পায়ুপথে কোনো গোটা বেরিয়ে আসার পর সেটি যখন আর ভেতরে না যায়।