করোনাভাইরাস
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে চীনসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশে যে রোগ ছড়িয়ে পড়েছে ভয়ঙ্কর প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস আরও ভয়াবহ রূপে ছড়াচ্ছে। চব্বিশ ঘণ্টায় নতুন কয়েকটি দেশে এ ভাইরাস ছড়িয়েছে। চীনে মৃতের সংখ্যাও ১২ ঘণ্টার মধ্যে বেড়েছে ১৫ জনে। আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই হাজারে পৌঁছেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে ব্যাপক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বিমানবন্দরে চীন থেকে আসা ১ হাজার ৭৮৩ জন যাত্রীকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে।কিন্তু এ ভাইরাসটির প্রকৃতি এবং কীভাবেই বা তা রোধ করা যেতে পারে- এ সম্পর্কে এখনো বিজ্ঞানীরা বিশদভাবে জানার চেষ্টা করছেন।
চীনে করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে প্রায় দুই হাজারেরও বেশি মানুষ। যদিও বেসরকারিভাবে বলা হয়েছে, আক্রান্তের সংখ্যা লক্ষাধিক। চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে উৎপত্তি হওয়া এ ভাইরাস এরই মধ্যে রাজধানী বেইজিংসহ ২৯টি প্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের সঙ্গে বাকি বিশ্বের সরাসরি বিমান যোগাযোগ থাকার কারণে ভাইরাসটি চীনের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, নেপাল, ফ্রান্স ও সৌদি আরবসহ অন্তত ১৩টি দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে।
করোনাভাইরাস কী এবং কীভাবে ছড়ায় :
করোনাভাইরাস এমন একটি সংক্রামক ভাইরাস, যা এর আগে কখনো মানুষের মধ্যে ছড়ায়নি। এটি অত্যন্ত দ্রুত ছড়াতে পারে এবং সোমবারই বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন যে এ ভাইরাস একজন মানুষের দেহ থেকে আরেকজন মানুষের দেহে ছড়াতে পারে। এ ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায়। সাধারণ ফ্লু বা ঠান্ডা লাগার মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে। ভাইরাসটির আরেক নাম ২০১৯-এনসিওভি। এটি করোনাভাইরাসের একটি নতুন প্রজাতি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি হয়তো ইতিমধ্যেই ‘মিউটেট করছে’ অর্থাৎ নিজে থেকেই জিনগত গঠন পরিবর্তন করে নতুন রূপ নিচ্ছেÑ যার ফলে এটি আরও বেশি করে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এক দশক আগে সার্স নামে যে ভাইরাসের সংক্রমণে পৃথিবীতে ৮০০ লোকের মৃত্যু হয়েছিল সেটিও ছিল এক ধরনের করোনাভাইরাস।
আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে কী লক্ষণ দেখা যায় :
করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ হলো, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, জ্বর এবং কাশি। কিন্তু এর পরিণামে অরগ্যান ফেইলিওর বা দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়া, নিউমোনিয়া এবং মৃত্যু ঘটতে পারে।
এর কি কোনো চিকিৎসা আছে :
যেহেতু এ ভাইরাসটি নতুন, তাই এর কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনো নেই এবং এমন কোন চিকিৎসা নেই যা এ রোগ ঠেকাতে পারে।
তাহলে এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কী : একমাত্র উপায় হলো যারা ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছে বা এ ভাইরাস বহন করছে তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা। তা ছাড়া ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়েছেন বারবার হাত ধোয়া, হাত দিয়ে নাক-মুখ স্পর্শ না করা, ঘরের বাইরে গেলে মুখোশ পরা।
বিবিসি বাংলা
©2014 Copyright by Micron Techno. All rights reserved.