করোনায় আক্রান্ত কি না নিশ্চিত হতে যেসব পরীক্ষা করা হয় ।
করোনা আক্রান্তের লক্ষণগুলো অনেকটা সাধারণ ভাইরাল জ্বরের মতোই। শীত চলে গিয়ে গরম পড়ছে। এই সময়েই আবার বিভিন্ন সাধারণ জ্বর-সর্দির ভাইরাসও মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
জ্বর-সর্দি-কাশি-গলা ব্যথা হলেই যে করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন, তা কিন্তু একেবারেই নয়। এই সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল- আপনি বা আপনার পরিবারের কোনও সদস্য এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কি না, তা কিভাবে বুঝবেন?
করোনা আক্রান্ত রোগীকে চিহ্নিত করার বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে। সেই পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট টেস্ট কিট প্রাইমারের সাহায্যেই একমাত্র এই রোগ নির্ণয় করা যায়।
রোগ নির্ণয়ে কিছু টেষ্ট:
নাজাল অ্যাসপিরেট: রোগের উপসর্গ দেখে চিকিৎসক যদি রোগীকে করোনা টেস্ট করার প্রয়োজন রয়েছে সে ক্ষেত্রে তাকে ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে। ল্যাবরেটরিতে নাজাল অ্যাসপিরেট টেস্টের মাধ্যমেও নমুনা সংগ্রহ করা হয়ে থাকে।
এ ক্ষেত্রে রোগীর নাকের মধ্যে স্যালাইন সলিউশন ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তারপর সেটা নমুনা হিসাবে সংগ্রহ করা হয়। বা যে সমস্ত রোগী মারাত্মক সর্দিতে ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে ওই সর্দির নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
স্বোয়াব টেস্ট: একটা লম্বা টিউবে তুলা জড়িয়ে রোগীর মুখ হাঁ করিয়ে গলা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয় এক্ষেত্রে। মূলত তুলায় রোগীর যে লালা লাগবে, সেটাকেই নমুনা হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
স্পুটাম টেস্ট: ফুসফুসে কোনও রকম সংক্রমণ হলেই প্রচুর পরিমাণে মিউকাস নির্গত হতে থাকে। ফুসফুসের এই মিউকাসকই হল স্পুটাম। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির ফুসফুস থেকে যে মিউকাস নির্গত হয়, সেই নমুনা সংগ্রহ হল স্পুটাম টেস্ট।
রক্ত পরীক্ষা: শরীরে কোনও রোগ-জীবাণু বাসা বাঁধলে রক্তের সংস্পর্শে তা আসবেই। করোনা ভাইরাস বাতাসবাহিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে বলে গলা ব্যথা ও সর্দির মাধ্যমে এই অসুখের সূত্রপাত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। সঙ্গে জ্বর তো থাকেই। শরীরে রক্তের মধ্যেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। তাই রোগীর রক্তের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়ে থাকে।
ট্র্যাকিয়াল অ্যাসপিরেট: একইভাবে শ্বাসনালী থেকেও অনেক সময় নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
তবে এখনও পর্যন্ত যে পাঁচটি পদ্ধতির করা উল্লেখ করা হল, তা রোগীর থেকে নমুনা সংগ্রহের পদ্ধতি মাত্র। নমুনা সংগ্রহের পর বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ল্যাবরেটরিতে সঠিক পরীক্ষার মাধ্যমেই একমাত্র রোগীর শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব।
তা হল আরটিপিসিআর বা রিয়েল টাইম পলিমিরেজ চেন রিঅ্যাকশন। রোগীর থেকে বিভিন্ন পদ্ধতিতে যে সমস্ত নমুনা সংগ্রহ করা হল, সেই নমুনায় করোনা ভাইরাস রয়েছে কি না তা জানতেই ল্যাবরেটরিতে এই আরটিপিসিআর করা হয়।
এর জন্য নির্দিষ্ট যন্ত্র রয়েছে। সেই যন্ত্রে করোনাভাইরাসের জেনেটিক কপি রয়েছে। এখন রোগীর থেকে সংগৃহীত নমুনার সঙ্গে মেশিনে থাকা ওই ভাইরাসের জেনেটিক কোড মেলানো হয়। যদি মিলে যায়, তা হলে রোগী করোনা পজিটিভ।
©2014 Copyright by Micron Techno. All rights reserved.