যাঁরা ফ্যাশন সচেতন, ওজন কমাতে তাঁরা বিস্তর খাটাখাটনি করেন। যাঁরা ফ্যাশন সচেতন নন, কে কি বলল এটা নিয়ে যাঁদের মোটেও মাথাব্যথা নেই, তাঁদের কী ওজন কমানোর দরকার আছে? বাড়তি ওজন, বাড়তি রোগ ডেকে আনে। অতিরিক্ত ওজনে কি ধরনের শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে জানতে চাইলে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক অসিত বরণ অধিকারী বলেন, শরীরে যখন অতিরিক্ত চর্বি জমতে থাকে তখন এই চর্বি শরীরের অন্যান্য অংশের সঙ্গে রক্তনালিতে জমতে থাকে, ফলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের শঙ্কা বেড় যায় অনেকটা। আরও যেসব শারীরিক সমস্যা হতে পারে জেনে নেওয়া যাক তাঁর কাছ থেকে।
* অতিরিক্ত ওজন উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
* বাড়তি ওজনের জন্য হৃদ্রোগ হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায় অনেকটাই।
* আর্থ্রাইটিস, গেঁটেবাত হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়। হাড়ের সন্ধিস্থল ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
* শ্বাসকষ্ট হওয়ার প্রবণতাও দেখা দিতে পারে। রোগী স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভুগতে পারে।
* ডায়াবেটিস টাইপ টু দেখা দিতে পারে অতিরিক্ত ওজন বাড়ার জন্য।
* যৌন আকাঙ্ক্ষা কমে যাওয়ার শঙ্কা থাকে।
এ ছাড়া পুরুষের শুক্রাণু কমে যেতে পারে এবং নারীদের ঋতুস্রাবেও অনিয়ম দেখা দিতে পারে।
মেদবহুল ব্যক্তির জরায়ু, প্রোস্টেট ও কোলন ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
ওজন কমানোর জন্য প্রথমেই নিজের আদর্শ ওজন কত এবং আদর্শ ওজনের চেয়ে কত বেশি আছে এটি জেনে নিন। এ ছাড়া কোনো শারীরিক সমস্যা আছে কি না, সে সম্পর্কেও ভালোভাবে জেনে তারপর ওজন নিয়ন্ত্রণে মনোযোগ দিতে হবে। দ্রুত ওজন কমাতে পুষ্টিবিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। একজনের ওজন উচ্চতা শারীরিক সক্ষমতাভেদে ডায়েট চার্ট এক এক রকম হয়ে থাকে।
তাই ওজন কামানোর কিছু সর্বজনীন পদ্ধতি জেনে নিন এবার—
* বাড়িতে অল্প তেলে রান্না করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
* খাবারে প্রচুর পরিমাণ আঁশজাতীয় খাদ্য অর্থাৎ শাকসবজি রাখুন।
* একবারে বেশি না খেয়ে ফেলে অল্প করে বেশিবার খান।
* ফাস্টফুড এবং অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার খাওয়া যাবে না।
* ক্যালরি মেপে খাবার খেতে হবে। কম ক্যালরিযুক্ত খাবার দিয়ে উদর পূর্তি সারুন।
* আঁশজাতীয়, খাবার, সবজি, সালাদ, টক-জাতীয় ফল খেতে হবে বেশি করে।
* শরীরের বিপাক-প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে পানি খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে।
এ ছাড়া অতিরিক্ত ঘুম, মানসিক চাপ ছাড়াও স্টেরয়েড এবং অন্য নানা ধরনের ওষুধ গ্রহণের ফলে ওজন বাড়তে পারে। তাই প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আর নিয়মিত হাঁটা খুব ভালো ব্যায়াম। প্রতিদিন নিয়ম করে হাঁটলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ ছাড়া সাইকেল চালানো ও সাঁতার কেটেও বাড়তি ওজন ঝেড়ে ফেলতে পারেন। তাই খাদ্যাভ্যাস আর জীবন যাপনে সামান্য পরিবর্তন এনে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন, সুস্থ থাকুন।
Ref
http://www.24livenewspaper.com/sinfo/?url=www.prothom-alo.com/
©2014 Copyright by Micron Techno. All rights reserved.