দেশে ডায়াবেটিসে ভোগা মানুষের সংখ্যা ৭১ লাখ। ২৫ বছর পর অর্থাৎ ২০৪০ সালে এই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে এক কোটি ৩৬ লাখে। ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) এই তথ্য দিয়েছে। ৯ নভেম্বর আইডিএফ এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
বিশ্বের যেসব দেশে ডায়াবেটিসের প্রকোপ বেশি, এমন ১০টি দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে আইডিএফ। তালিকার শীর্ষে আছে চীন, ১০ নম্বরে আছে বাংলাদেশ। ২০৪০ সালে এই তালিকায় পরিবর্তন আসবে, বাংলাদেশের অবস্থান এক ধাপ এগিয়ে নবম হবে।
আইডিএফের দেওয়া তথ্যের সঙ্গে বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপের তথ্যের বেশ পার্থক্য আছে। ২০১১ সালের এই জরিপে বলা হয়েছিল, দেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৫০ লাখ। আর ২০২৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৮০ লাখে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইডিএফ এবং জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপের দেওয়া পরিসংখ্যানের মাঝামাঝি হয়তো সঠিক সংখ্যা আছে।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা যা-ই হোক না কেন, জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ বলছে, আক্রান্ত ৬০ শতাংশ নারী ও ৬৫ শতাংশ পুরুষ জানে না যে তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। অন্যদিকে যারা জানে যে তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাদের প্রতি তিনজনের একজন শুধু চিকিৎসা নিচ্ছে। একই জরিপে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের গ্রামে ডায়াবেটিস রোগী বেশি।
আইডিএফ বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিসের কিছু চমক লাগানো পরিসংখ্যান দিয়েছে। তারা বলেছে, বিশ্বের প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি ১১ জনের মধ্যে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। আক্রান্ত ব্যক্তিদের দুজনের একজন জানে না যে সে এই রোগে আক্রান্ত। বর্তমানে বিশ্বের স্বাস্থ্য খাতের ১২ শতাংশ ব্যয় হচ্ছে ডায়াবেটিসের পেছনে। বর্তমান বিশ্বে ৫ লাখ ৪২ হাজার শিশু টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। অর্থাৎ এসব শিশু নিয়মিত ইনসুলিন পেলেই বেঁচে থাকবে।
বাংলাদেশের শিশুদের মধ্যেও টাইপ-১ ডায়াবেটিসের প্রকোপ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বারডেমের ‘চেঞ্জিং ডায়াবেটিস ইন চিলড্রেন প্রোগ্রামের’ (সিডিআইসি) সমন্বয়কারী বেদোয়ারা জেবিন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, সারা দেশে ১৮ বছরের নিচে ২ হাজার ৭৬৬ জন শিশুকে তাঁরা নিবন্ধন করেছেন, এরা টাইপ-১ ডায়াবেটিসে ভুগছে। এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ধারণা, প্রকৃত সংখ্যা হয়তো এর দ্বিগুণ। তিনি জানান, এই কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা প্রায় সব শিশুকে বিনা মূল্যে ইনসুলিন দেওয়া হয়। ইনসুলিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নভোনরডিস্ক তাদের এই সহযোগিতা দিচ্ছে।
শিশু যদি বারবার পানি পান করে, প্রস্রাব বারবার করে, তা হলে ওই শিশুর ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। আবার শিশু যদি ক্ষুধার কথা বলে, বারবার খায় অথচ তার ওজন যদি কমতে থাকে, তা হলেও তার ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
তবে দুশ্চিন্তার আরও বিষয় আছে। বেদোয়ারা জেবিন জানালেন, শিশুদের মধ্যে টাইপ-২ অর্থাৎ বয়স্কদের ডায়াবেটিসও দেখা দিচ্ছে। এ বছর ওই কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা ৫৪টি শিশুর টাইপ-২ ডায়াবেটিস শনাক্ত হয়েছে।
©2014 Copyright by Micron Techno. All rights reserved.